বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার বড় ধাক্কার সম্মুখীন হল আদানি গ্রুপ (Adani Group)। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত বৃহস্পতিবার হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh) হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আদানি পাওয়ার লিমিটেডকে ২৮০ কোটি টাকা প্রিমিয়ামের অর্থ ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে সিঙ্গেল বেঞ্চের সিদ্ধান্তকে বাতিল করেছে। এদিকে, এই সিদ্ধান্ত হিমাচল প্রদেশের সুখু সরকারকে দারুণ স্বস্তি এনে দিয়েছে। বিচারপতি বিবেক সিং ঠাকুর এবং বিচারপতি বিপিন চন্দ্র নেগির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ২০২২ সালে সিঙ্গেল বেঞ্চের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হিমাচল প্রদেশ সরকারের দায়ের করা আবেদনের শুনানির সময়ে এই সিদ্ধান্ত দেয়।
বড় ধাক্কা খেল আদানি গ্রুপ (Adani Group):
এমতাবস্থায়, মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারকে স্বস্তি দিয়ে, হিমাচল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের সিদ্ধান্তকে বাতিল করেছে। ২০২২ সালে সিঙ্গেল বেঞ্চ কিন্নর জেলার ৯৬৯ মেগাওয়াট জাঙ্গি থোপন পাওয়ার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সাথে যুক্ত আদানি পাওয়ার লিমিটেডকে (Adani Group) ২৮০ কোটি টাকার প্রিমিয়ামের অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এদিকে, ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে যে আদানি গ্রুপ এর অধিকারী নয়।
হিমাচল প্রদেশের অ্যাডভোকেট জেনারেল অনুপ কুমার রতন বলেছেন যে, “বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে আদানি পাওয়ার লিমিটেডকে (Adani Group) ২৮০ কোটি টাকা প্রিমিয়াম দেওয়ার ক্ষেত্রে সিঙ্গেল বেঞ্চের আদেশ বাতিল করেছে। আমরা ডিভিশন বেঞ্চের সামনে সিঙ্গেল বেঞ্চের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। যা রাজ্য সরকারের পক্ষে রায় দেয়।”
অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেছেন, ডিভিশন বেঞ্চ তার সিদ্ধান্তে মন্তব্য করেছে যে প্রকল্পটি কেনার জন্য রাজ্য সরকারের সামনে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। রায়ে বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপ (Adani Group) “পেছনের দরজা” দিয়ে এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছিল। যা এই প্রকল্পের চুক্তির শর্তের পরিপন্থী ছিল। তাই, প্রিমিয়ামের অর্থ আদানি গ্রুপকে ফেরত দেওয়া হবে না। সরকার ব্র্যাকেল কোম্পানির সাথে একটি প্রকল্প চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু কোম্পানিটি জাল দলিলের মাধ্যমে প্রকল্পটি অধিগ্রহণ করে। যা চুক্তির পরিপন্থী বলে প্রমাণিত হয়। এরপর সরকারের সম্মতি ছাড়াই ব্রেকেল কোম্পানি আদানি গ্রুপকে এই প্রকল্পের সদস্য করে। এইভাবে ব্রেকেল কোম্পানিও প্রিমিয়ামের অর্থের অধিকারী নয়।
আরও পড়ুন: ইলিশ নাকি বিষ ধরতে পারবেন না! কিনতে যাওয়ার আগে হন সতর্ক, নাহলেই হবে “খেল খতম”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আদানি পাওয়ার লিমিটেড ভারতীয় চুক্তি আইনের ধারা ৬৫ এবং ৭০-এর অধীনে রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছিল। আদালত দেখেছে যে আদানি এবং রাজ্যের মধ্যে কোনও আইনি সম্পর্ক নেই। যা ধারা ৭০-এর অধীনে এই ধরণের দাবির জন্য প্রয়োজনীয়। আদালত জোর দিয়েছিল যে আদানি গ্রুপ (Adani Group) কর্তৃক ব্র্যাকেলের অর্থ প্রদানের সাথে সম্পর্কিত লেনদেনগুলি রাজ্যের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হওয়ার ভিত্তি স্থাপন করে না। আদালত বলেছিল, ব্রেকেল এবং আদানি গ্রুপ সমানভাবে দোষী ছিল। যেটি ধারা ৬৫-র অধীনে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে যেকোনও দাবিকে বাতিল করে।
আরও পড়ুন: প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করতে ইচ্ছুক? নতুন পথের দিশা নিয়ে হাজির TreasureNFT Business School
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ২০১৯ সালে আদানি পাওয়ার (Adani Group) কিন্নর জেলার দু’টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ব্র্যাকেল কর্পোরেশনের করা অর্থপ্রদানের কথা উল্লেখ করে, সুদের সাথে ২৮০.০৬ কোটি টাকা ফেরত চেয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছিল। ৯৬৯ মেগাওয়াটের এই প্রকল্পটি ২০০৭ সালে ব্র্যাকেলকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোম্পানিটি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে এবং অগ্রিম প্রিমিয়াম জমা দেয়নি। এরপর এই প্রকল্পটি দেওয়া হয় আদানি গ্রুপকে। আদানি গ্রুপ অগ্রিম প্রিমিয়ামের সুদের সাথে ২৮০.০৬ কোটি টাকা ফেরত পায়। এদিকে, পরে এই প্রকল্পের টেন্ডার বাতিল করা হয়।