‘দিদির লোকগুলো গ্রেফতার হলেও ভাইপোর টিম ছাড়’, কেষ্টর হেফাজতের মাঝেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য অধীরের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রথমে পার্থ আর এবার সেই তালিকায় যোগ দিলেন কেষ্ট! কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে একের পর এক তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় ক্রমশ চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। এসকল ঘটনায় শাসক দলকে আক্রমণ শানানোর কোনও অস্ত্রই হাতছাড়া করতে নারাজ বিরোধী দলগুলি। সম্প্রতি, এসএসসি (SSC) দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ইতিমধ্যে ইডি হেফাজত থেকে বেরিয়ে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে স্থান হয়েছে তাঁর। এর মাঝেই আবার গতকাল সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)।

এরপর থেকেই অনুব্রতর পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে চলেছে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপির মতো দলগুলি। ঢাক-ঢোল বাজানোর পাশাপাশি কোথাও কোথাও গুড় ও বাতাসা বিলি করতেও দেখা গিয়েছে তাদের আর এবার দুর্নীতি মামলা ছেড়ে তৃণমূল দলের অন্দরের দ্বন্দকে প্রকাশ্যে আনলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূলের অন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম ‘ভাইপো’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি পৃথক দল তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করতে থাকে বিরোধী দলগুলি। অনুব্রত গ্রেফতারির পর সেই জল্পনা উস্কে দিয়ে অধীর চৌধুরীর দাবি, “লক্ষ্য করুন, দিদির টিমের লোকগুলো ক্রমশ গ্রেফতার হয়ে চলেছে। কিন্তু অপরদিকে, ভাইপোর দলের লোকগুলো ছাড়। গরু চুরি কিন্তু কেবলমাত্র কেষ্টই করেনি, এক্ষেত্রে রাজ্যের পুলিশের পাশাপাশি বিএসএফরাও জড়িত রয়েছে। কিন্তু কেউ কিছু বলছে না।”

এরপরেই শাসকদলের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়ে অধীর জানান, “অধীর চৌধুরীকে সিবিআই কিংবা ইডি ডাকলে কিন্তু হাসপাতালে যাবে না। বর্তমানে যেভাবে একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা ঘটে চলেছে, তা হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মদতে। এখন তো সবে শুরু হয়েছে, ভবিষ্যতে আরো অনেকে ধরা পড়বে।”

প্রসঙ্গত, যেভাবে দুর্নীতি মামলায় একের পর এক তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করে চলেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি, তাতে চিন্তা ক্রমশ বেড়ে চলেছে শাসকদলের। এসএসসি মামলায় প্রথমেই ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর এবার সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়লেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকটি হাজিরা এড়ালেও গতকাল সকাল হতেই অনুব্রতর বীরভূমের বাড়িতে পৌঁছে যায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসাররা। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে বিকালে গ্রেফতার করা হয় কেষ্টকে।

Untitled design 2022 08 11T151210.493

পরবর্তীতে আদালতে তোলা হলে দশ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় তৃণমূল নেতাকে। একইসঙ্গে অনুব্রত শারীরিক বিষয় নিয়েও একাধিক নির্দেশ দেন বিচারপতি। প্রতি ৪৮ ঘন্টা অন্তর অন্তর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পাশাপাশি কেষ্ট যাতে শারীরিক এবং মানসিক ধকল না পান, সেদিকটিও নজরে রাখতে বলেছে আদালত। ফলে সিবিআই হেফাজতে জেরার মুখে অবশেষে অনুব্রতর মুখ থেকে নতুন কিছু তথ্য সামনে উঠে আসে কিনা, সেদিকে নজর সকলের।


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর