বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলার শক্তিপীঠগুলির মধ্যে অন্যতম আদ্যাপীঠ। যুগযুগ ধরে ভক্তদের মনে ভক্তিভাব জাগিয়ে তুলেছে এই শক্তিপীঠ। আদ্যাপীঠে মা কালী পূজিত হন মহামায়া রূপে। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের শিষ্য শ্রী অন্নদা ঠাকুরের (Annada Thakur) প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয় আদ্যাপীঠ (Adyapeath Mandir)।
আদ্যাপীঠের (Adyapeath Mandir) ইতিকথা
২৭ বিঘা জমির উপর অবস্থিত আদ্যাপীঠে (Adyapeath Mandir) দেবী আদ্যার মূর্তি ছাড়াও রয়েছে রাধাকৃষ্ণ ও রামকৃষ্ণদেবের মূর্তি। অন্নদা ঠাকুরের পূর্ববর্তী নাম ছিল অন্নদাচরণ ভট্টাচার্য। চট্টগ্রাম থেকে অন্নদাচরণ কলকাতায় আসেন কবিরাজি পড়তে। সেখান থেকে উত্তীর্ণ হয়ে খোলেন ডিসপেনসারি। অন্নদাচরণ ভট্টাচার্যর অনুগামীরা ১৯১৫ সালে মূল মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন।
তবে বর্তমান আদ্যাপীঠ মন্দিরটি (Adyapeath Mandir) স্থাপিত হয় ১৯৬৭ সালে। কথিত রয়েছে, রামকৃষ্ণের থেকে স্বপ্নাদেশ পেয়ে অন্নদা ইডেন গার্ডেনসের পাশের ঝিল থেকে উদ্ধার করেন একটি ১৮ ইঞ্চির আদ্যা মায়ের মূর্তি। সেই দিনটা ছিল রাম নবমী। সেই রাতে অন্নদা স্বপ্নাদেশ পান মায়ের। মা বলেন, ‘অন্নদা কাল বিজয়া দশমী। তুমি আমায় গঙ্গায় বিসর্জন দিও।’ অন্নদা ভাবেন মা হয়ত পুজো না পেয়ে চলে যেতে চাইছেন।
আরোও পড়ুন : ফের বাজিমাত ভারতের! দীপাবলির কেনাকাটায় পাত্তা পাচ্ছে না চিনা পণ্য, সামনে এল বড় আপডেট
তখন অন্নদাকে মা আশ্বস্ত করে বলেন,’আমি শুধু শাস্ত্র বিহিত মতে পুজো পেতে চাই তা নয়। মা খাও, মা পড়ো – এমন সহজ সরল প্রাণের ভাষায় যে ভক্ত নিজের ভোগ্যবস্তু এবং ব্যবহার্য বস্তু আমাকে নিবেদন করেন, সেটাই আমার পুজো। যদি কোনও ভক্ত আমার সামনে আদ্যাস্তোত্র পাঠ করে, তাহলে আমি বিশেষ আনন্দিত হই।’ মায়ের আদেশ মতো অন্নদা বিজয়া দশমীতে ভাসান দিয়ে দেন মূর্তিটি।
5. Maa Adyapith Kali Mandir, #Kolkata pic.twitter.com/uj9qqewt2f
— Varsha Singh (@varshaparmar06) March 10, 2023
অন্নদা সেই মূর্তির একটি ছবি তুলে রাখেন। সেই ছবি থেকেই তৈরি হয়েছে বর্তমান মূর্তিটি। জানা যায়, ১৩২৫ বঙ্গাব্দে স্বপ্নে রামকৃষ্ণ অন্নদাকে দীক্ষা দেন। স্বপ্নে রামকৃষ্ণ বলেন, ‘তোর কবিরাজি ব্যবসা হবে না’। ১৩৩৫ বঙ্গাব্দে পুরীতে অন্নদা ঠাকুরের জীবনাবসান হয়। অন্নদা ঠাকুরের মতাদর্শে আজও আদ্যাপীঠে সেবা দিয়ে চলেছেন ভক্ত, শিষ্য ও অনুগামীরা। নিয়ম মতোই আজও মায়ের মূর্তির সামনে পাঠ করা হয় আদ্যাস্তোত্র।