বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে তালিবানের ক্ষমতা বদল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। তালিবানরা কাবুল সমেত আফগানিস্তানের বেশিরভাগ এলাকাই দখল করে নিয়েছিল। শুরু হয়ে গিয়েছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে নাম উঠে আসছে আলী আহমদ জালালীর। কিন্তু কি করে তালেবানদের পক্ষে সম্ভব হল এই অসম্ভব যুদ্ধ জয়।
কারণ তালিবানদের সেনার সংখ্যা আফগান সেনাবাহিনীর তুলনায় অনেকটাই কম। ২০১৪ সালে আমেরিকা জানিয়েছিল তালিবানদের সৈন্যসংখ্যা কুড়ি হাজার মত। যদিও এর কোন আধিকারিক বয়ান পাওয়া যায়নি। তবে পরের দিকে এই সংখ্যা আরও বাড়তে শুরু করে। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে এই সৈন্য সংখ্যা ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ হতে পারে। তবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অবশ্য কিছুটা আলাদা। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, তালিবানি সদস্যের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ, যার মধ্যে ৬০ হাজার লড়াকু যোদ্ধা এবং ৯০ হাজার স্থানীয় যোদ্ধা রয়েছে।
অন্যদিকে আফগান সৈন্যদলের দিকে তাকালে দেখতে পাওয়া যাবে তাদের শক্তি ছিল অনেক অনেকটাই বেশি। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীতে অফিসারের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৫২ হাজার। এছাড়া রক্ষা মন্ত্রণালয়ে আর্মি, এয়ার ফোর্স এবং স্পেশাল অপারেশন ফোর্স মিলিয়ে মোট আধিকারিকের সংখ্যা ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৪৭৮ জন। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১ লক্ষ ৩ হাজার ২২৪ ছিলেন। এছাড়া আফগান ন্যাশনাল আর্মির পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯ সালে সেখানেও ১ লক্ষ ৮০ হাজার সৈন্য ছিল।
এত সৈন্য এবং ন্যাটোর প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র থাকা সত্ত্বেও কেন হারল আফগানিস্তান সেনা। জানা গিয়েছে, এর একটা বড় কারণ দুর্নীতি। সেনারা মাসের পর মাস বেতন পাননি। যুদ্ধ করতে গিয়ে তাঁদের কাছে পৌঁছায়নি খাবার। যার জেরে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় রীতিমতো ক্লান্ত হয়ে পড়ে অনেক সেনাই। শেষ পর্যন্ত তালিবানরা যখন একের পর এক থানা এবং সেনাছাউনি দখল করে তখন তাদের অনেকেই তালিবানদের দলে যোগ দেয়। যার জেরেই আফগানিস্তান সরকারের পতন সুনিশ্চিত হয়।