বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: আগ্রার কিরাওয়ালি জেলার নাগলা কৌরি লোধা তহসিলের বাসিন্দা ত্রিলোক ট্রাক্টর ও মোটরসাইকেল পাংচার সারাই করার কাজ করেন। কুঁড়েঘরে দোকান চালিয়ে পেট চালানো ত্রিলোকিও বুঝতে পারেননি যে তিনি একদিন তিনি একটি অভিনব আবিষ্কারের জনক হবেন। একদিন ত্রিলোকি তার কম্প্রেসারে একটি জল-টানা ইঞ্জিন দিয়ে বাতাস ভর্তি করছিলেন। এই সফরে হঠাৎ কম্প্রেসারের দেওয়াল ভেঙে যায়। ভেঙে যাওয়ায় ইঞ্জিনে বাতাস ভরতে শুরু করে এবং ইঞ্জিনটি উল্টো দিকে ঘুরতে থাকে। এই দেখেই ত্রিলোকের মন বিহ্বল হয়ে গেল। তখনই সে বাতাসের শক্তি বুঝতে পারে। এ নিয়ে তার মাথায় একটা চিন্তা আসে যে কেন ইঞ্জিন চালানোর জন্য বাতাস ব্যবহার করবেন না।
বাতাসের সাথে ইঞ্জিন চালানোর তাড়না তার মনে এমনই গেঁথে গিয়েছিল যে সে নিজের বাড়িতেও থাকতো একজন অপরিচিত ব্যক্তির মতোই। রাতদিন দোকানে বসে থাকে, এই চিন্তায় মগ্ন থাকতো। সে যখন লোকেদের কাছে এ কথাগুলি বলতো, তখন লোকেরা তার কথা হেসে উড়িয়ে দিত। এমনকি অনেকে তাকে পাগলও ঘোষণা করে দিয়েছিল। কিন্তু দমে যাননি ত্রিলোক। স্ক্র্যাপ সামগ্রী কিনে ইঞ্জিন তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। প্রতিদিন তিনি নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। কিন্তু কখনও সাফল্যের আশা না দেখলেও তিনি থামেননি। ত্রিলোকি তার প্রচেষ্টায় প্রায় নশো বারের বেশি ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু ১৪ বছর ধরে বাতাসে ইঞ্জিন চালানোর জন্য তার জেদ তাকে অন্য কোন কাজ করতে দেয়নি।
ত্রিলোক হাওয়া দিয়ে ইঞ্জিন চালানোর জেদে নিজের ঘরবাড়ির কথাও ভুলে থাকতেন। তিনি দিনরাত দোকানেই কাজ করতেন এবং নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতেন। এই সাধনার খরচ জোগাতে তিনি নিজের খামার এবং একটি প্লটও বিক্রি করেছিলেন, যার মূল্য ছিল প্রায় ৫০ লাখ টাকা। ত্রিলোকির বাড়িতে না যাওয়ার কারণে তার ভাই তাকে দোকানেই খাবার দিয়ে যেতেন এবং ত্রিলোকি তার নিজের মনে খেয়ালেই ডুবে থাকতেন। শেষপর্যন্ত নাকি তার পরীক্ষা সফল হয়েছে। ত্রিলোকের দাবি, এখন সেচের জন্য ব্যবহৃত ইঞ্জিন বাতাসে চলতে শুরু করেছে।
ত্রিলোকি বলেছেন যে সরকার যদি তার এই অভিনব আবিষ্কারকে মর্যাদা দেয় তবে এটি এই অলৌকিক কাজটি করে দেখাতে পারে। ত্রিলোকি বলছেন, তার তৈরি এই ইঞ্জিনের সাহায্যে বাইক, ট্রাক, ট্রাক্টরের পাশাপাশি ময়দার কল, বোরওয়েল এবং বিদ্যুৎও চালানো যাবে। ত্রিলোকির এই আবিষ্কারে তার সহকর্মী ছিলেন রামপ্রকাশ পণ্ডিত, অর্জুন সিং, রামকুমার, সন্তোষ চাহার, রামধানি ও চন্দ্রপ্রকাশ।