বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সাত-সাতবার বিয়ে। তারপর আনন্দে গদগদ নতুন বরকে লুটে বেপাত্তা। ফিল্মের গল্পের মতন লাগছে বুঝি? গল্প হলেও সত্যি। পুলিশের ফাঁদে এবার ধরা পড়লেন সেই ডাকাতে বউ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে।
মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা বছর ২৮ এর উর্মিলা আহারিবার কে দেখলে তার পাঁচটা সাধারণ মেয়ের থেকে কোনো অংশেই তফাত বোঝার নেই। বছর আটেক আগে অজয় নামের একজনের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। কিন্তু বিয়ের মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই বিধবা হন উর্মিলা। অকুল পাথারে পড়ে ফেরেন বাবা মায়ের কাছে। সেখানে সেলাইমেশিন চালিয়েই চালাতেন নিজের খরচা। এইভাবে চলতে চলতেই একদিন হঠাৎ বদলে যায় তাঁর জীবন।
একসময় উর্মিলার আলাপ হয় ভাগচন্দ নামের এক যুবকের সঙ্গে। এরপর একে একে যোগ দেন অর্চনা বর্মন, শ্যাম, অমর সিং প্যাটেল। প্রত্যেকেরই দরকার ছিল একটাই। টাকা। তাই শুরু হয় দল গড়ে পরিকল্পনা। উর্মিলাকেই হাতিয়ার করা হয় এই প্ল্যানে।
বেশি বয়সের অবিবাহিত পুরুষদের চিহ্নিত করতে শুরু করে দলটি। তারপর উর্মিলাকে পাত্রী এবং বাকিদের পাত্রীর আত্মীয় সাজিয়ে হাজির হয় সেই পাত্রের বাড়িতে। ধুমধাম করে হয় বিয়ে। এরপরই সুযোগ বুঝে টাকা পয়সা নিয়ে চম্পট। এভাবেই চলছিল ব্যাপারটি। প্রথমে রাজস্থানের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে বিয়ের ৪ মাস পর ২০ হাজার টাকা এবং গয়না নিয়ে ভাগেন উর্মিলা। এরপর মধ্যপ্রদেশের সাগরে দ্বিতীয় বিয়ে করে ১৫ দিনের মধ্যে ২২ হাজার টাকা এবং গয়না, দমেহতে তৃতীয় বিয়ে করে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেন তিনি। চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বিয়ে সারেন যথাক্রমে রাজস্থানের রাজাখেড়া, ধৌলপুর এবং জয়পুরে।
সব ঠিক ঠাক চললেও বিপদ ঘটল সপ্তম বিয়েতে। গত ২ ফেব্রুয়ারি জব্বলপুরের ৪১ বছর বয়সী দশরথকে বিয়ে করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েন উর্মিলা। বিয়ের কিছু মিনিটের মধ্যেই টাকা এবং গয়না নিয়ে পালান তিনি। কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়েন অর্চণা। তাঁর দেওয়া তথ্যের সূত্রেই দলটিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সোনম কাপুরের একটি সিনেমা ডলি কি ডোলি। সেখানে হুবহু একই ভাবে বিয়ের রাতে বরদের লুটে পালাতেন সোনম। শেষমেষ ধরা পড়েন তিনিও। এই ঘটনায় দলটি ওই সিনেমাটি থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছে বলেই প্রাথমিক তদন্তের পর ধারণা পুলিশের।