বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কয়েক বছর ধরে শিক্ষাব্যবস্থায় নানা দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে কেলেঙ্কারির জেরে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ বহুজনা। এখনও আদালতে নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলা চলছে। সবমিলিয়ে বেহাল দশা শিক্ষাব্যবস্থায়। এবার স্কুল (School ) সংক্রান্ত এক জনস্বার্থ মামলাতে রাজ্যকে বড় নির্দেশ হাই কোর্টের (Calcutta High Court)।
কী বলল হাইকোর্ট? Calcutta High Court
প্রায় একবছর হয়ে গেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকড়া জুনিয়র হাই স্কুলে পড়ুয়া ভর্তি বন্ধ। এবার সেই আদিবাসী এলাকায় বন্ধ স্কুল খুলতে রাজ্যকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। জানা গিয়েছে, গত বছর শিক্ষকের অভাবে ওই স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। যার জেরে সমস্যায় পড়ছিল পড়ুয়া। এই নিয়ে মামলা হলে অবিলম্বে সেই শিক্ষক নিয়োগ করে পঠনপাঠন চালু করার নির্দেশ দিল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
হাইকোর্টের নির্দেশ, প্রয়োজনে বাইরের স্কুল থেকে শিক্ষক এনে স্কুল চালু করতে হবে রাজ্যকে। এদিন মামলা শুনানির জন্য উঠলে রাজ্যও স্কুল চালুর পক্ষে সওয়াল করে। স্কুল খুলতে সব রকম পদক্ষেপ করা হবে আশ্বাস দেয় রাজ্যের আইনজীবী। আদালতে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট স্কুলে তিন জন স্থায়ী শিক্ষক ও অতিথি শিক্ষকের নিয়োগের কথা ভাবছে রাজ্য।
যদিও গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, ওই স্কুলে আগে ১৫০-২০০ জন মত পড়ুয়া ছিল। প্রশাসনই শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। এবার স্কুল বন্ধ করার কথা বলা হচ্ছে। এই নিয়েই হাই কোর্টের দরজায় যান গ্রামবাসীরা। জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। এদিন মামলাকারীদের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, ওই স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী তফসিলি জনজাতির। স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের সমস্যা হচ্ছে।
পড়ুয়াদের কথা তুলে তিনি বলেন, ‘চার কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে চাইছে না অনেক পড়ুয়াই। যার ফলে পড়াশোনায় অনীহা হচ্ছে তাদের। স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। স্কুলটি পুনরায় চালু করার দাবি জানিয়ে আইনজীবী বলেন, স্কুলটি না খুলতে পারলে প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ আদিবাসী পরিবারের সন্তানেরাই শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেলে তার প্রভাব পড়বে এলাকার মানুষের উপর। স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়বে, শিশুশ্রমিকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ, অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ করে ওই স্কুল চালু করতে হবে রাজ্যকে। শিক্ষা দফতরকে সমস্ত রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
আরও পড়ুন: মেঘলা আকাশ! টানা দু’দিন ঝেঁপে বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গে, স্বস্তির খবর দিল আবহাওয়া দপ্তর
আদালতের আরও নির্দেশ, যাতে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ওই স্কুলে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া শুরু হয় সেই বিষয়ে রাজ্যকে পদক্ষেপ করতে হবে। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। আপাতত তিন জন শিক্ষককে পাঠিয়েছে রাজ্য। আদালতের কড়া নির্দেশের পরই নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষাদফতর।