”আমি তো দূর, আমার বাবাও দিতে পারবে না!” ১ লাখের বিদ্যুৎ বিল পেয়ে বললেন দরিদ্র কাঠমিস্ত্রি

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পেশায় কাঠমিস্ত্রি। টিন দিয়ে কোনরকমে তৈরি করেছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন বিপিএল তালিকাভুক্ত হওয়ায়। অন্যদিকে বিপিএল তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে ৭৫ ইউনিট পার হয় না অধিকাংশ সময়। এর ফলে জিরো অ্যামাউন্ট আসে বিদ্যুৎ বিল (Electric bill)। কিন্তু এই ব্যক্তির বিদ্যুৎ বিল বাকি রয়েছে এক লক্ষ টাকা! এমনই একটি ভুতুড়ে বিল পেয়ে কাঠমিস্ত্রির (Carpenter) চক্ষু চরক গাছ। শুধু তাই নয়, ভুলেছেন ঘুম-নাওয়া-খাওয়াও।

সূত্রের খবর, কাঠমিস্ত্রি নিয়মিত ছুটছেন বিদ্যুৎ দপ্তরে। তার সমস্যার কথা জানিয়েছেন লিখিতভাবে। কিন্তু সেই সমস্যার কোন সমাধান হয়নি আজও। কাঠমিস্ত্রি অখিল বিশ্বাস এখন রীতিমতো নাজেহাল তার ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে। কিছুদিন ধরেই তিনি ইলেকট্রিক অফিসে এক লক্ষ টাকা বিলের বোঝা নিয়ে ঘুরছেন। অফিসে গেলে একের পর এক শুধু তারিখ দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে খবর পেয়ে বালুরঘাট (Balurghat) বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরা এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

   

পেশায় কাঠমিস্ত্রি অখিল বিশ্বাস দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের শনিহারা গ্রামের বাসিন্দা। সংসারে রয়েছে দুই ছেলে, পুত্রবধূ ও স্ত্রী। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তার নাম রয়েছে বিপিএল তালিকায়। তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ নেন ২০১৫ সালে। ৭৫ ইউনিট পার না হওয়ায় তার বিদ্যুৎ বিল আসে শূন্য। তার দাবি কোনরকম বিদ্যুতের বিল বকেয়া নেই। অথচ গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পরপর দুটি ত্রয়ীমাসিকে তার বিল এসেছে। একটি বিলে ৫২ হাজার ৩০০ টাকা ও অন্যটিতে ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা বকেয়া রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। অখিল বাবু এই বিপুল পরিমাণ বিল দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

electric meter

অখিল বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রথম বিলের বিষয়টি নিয়ে বালুরঘাট ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ে আবেদন করলেও পরের মাসে ৫২৮০০ টাকার বিল আসে। অর্থাৎ দুটি বিল মিলে মোট বিল দাঁড়িয়েছে আটানব্বই হাজার একশো টাকা। সাফ দাবি করে এই কাঠমিস্ত্রি বলেছেন, “যত টাকা বকেয়া বিল এসেছে সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আমার কেন আমার বাবারও নেই।” অন্যদিকে অখিল বাবুর স্ত্রী কাঞ্চন বিশ্বাস বলেছেন, “দুটি টিনের ঘর আছে শুধু। আমরা গরীব মানুষ। একটা ফ্যান আছে ছোট। এরপরেও কিভাবে এত বিল আসে তা ভেবেই পাচ্ছিনা।” এই বিষয়ে বালুরঘাট বিদ্যুৎ বণ্টন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বজিৎ মন্ডল জানিয়েছেন তিনি এই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

Avatar
Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর