বাংলাহান্ট ডেস্ক : মিড ডে মিলের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ যোজনা’ রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)। এই খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। কমেছে রাজ্য পিছু বরাদ্দ টাকাও। এ নিয়ে বিতর্কও হয়েছে অনেক। তবে সমস্যার সেখানেই শেষ নয়। সেই বরাদ্দের টাকাও জোটেনি বাংলার কপালে। কারণ, কেন্দ্রীয় পোর্টালের ব্যর্থতা। তার জেরে চলতি অর্থবর্ষের পাঁচ মাস কাটতে চললেও মিড ডে মিলে (Mid-Day-Mill) কেন্দ্রীয় বরাদ্দের অংশের কোনও টাকাই এখনও পায়নি বাংলা।
১০০ দিনের কাজে রাজ্যের প্রাপ্য টাকাও দিচ্ছে না কেন্দ্র—এই অভিযোগ একাধিকবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সরব হয়েছেন মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। তারপরও খুব একটা কাজের কাজ হয়নি। উল্টে ১০০ দিনের কাজে বারবার সর্বাধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা পশ্চিমবঙ্গেই হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
বার বার উঠে এসেছে নানা নিয়মের ফাঁস। এ সবই বাংলা পালন করেছে। তারপর শুরু হয়েছে শুধু অপেক্ষার পালা। কিন্তু এরই সঙ্গে এবার জুড়েছে মিড ডে মিল এবং পোর্টাল সংক্রান্ত ‘সমস্যা’। সমস্ত বেতন, প্রকল্পের বরাদ্দ এই ‘পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (পিএফএমএস) পোর্টালের মাধ্যমে দিতে শুরু করেছে কেন্দ্র। অথচ, পোর্টালটি ঠিকমতো তৈরিই হয় নি। যার জেরে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়েছে প্রথম থেকেই। কখনও আটকে গিয়েছে বেতন, আবার কখনও মেলেনি বরাদ্দ টাকা। সেই তালিকায় পড়েছে মিড ডে মিল প্রকল্পও। রাজ্যের এক আধিকারিক জানান, এই প্রকল্পের মধ্যে বিভিন্ন খাতে যে বরাদ্দ টাকা কেন্দ্র পাঠায়, সেগুলি পিএফএমএস পোর্টালে ঠিক মতো কাজই করছে না।
তবে, দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রযুক্তিগত ত্রুটি সমাধানের চেষ্টা করছে পিএফএমএস কর্তৃপক্ষ। সমস্যা মিটলে টাকা পাওয়া যাবে বলেই তিনি মনে করেন।
করোনা অতিমারির সময় স্কুল বন্ধ থাকলেও নিয়মিত মিড ডে মিলের সামগ্রী বণ্টন থামায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রান্নার খরচ বেঁচে যাওয়া টাকায় দেওয়া হয়েছে সাবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক প্রভৃতি জিনিস। বর্তমান অর্থবর্ষে রাজ্য বাজেটে মিড ডে মিল খাতে ধার্যের পরিমাণ ২৩৮৬ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে নিয়ম মেনে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আসার কথা ১৫০০ কোটি টাকারও বেশি। আর তা দিতে গিয়েই বেহাল দশা মোদি সরকারের। শুধু অর্থ নয়, মিড ডে মিলে পড়ুয়া পিছু বরাদ্দও বাড়ানোর দাবি উঠছে দীর্ঘদিন ধরেই। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কম হলেও তা বৃদ্ধি করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু ২০২১ থেকে তা আর বাড়েনি।
এই বিষয়ে রাজ্যের ওই আধিকারিক বলেন, মিড ডে মিলের খরচ কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ৬০:৪০ অনুপাতে ভাগ হওয়ার কথা। রাজ্য চাইলেই পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ বাড়িয়ে দিতে পারে না। কেন্দ্রকে এব্যাপারে উদ্যোগী হতেই হবে। মিড ডে মিলের জন্য প্রাথমিক স্তরের ছাত্রছাত্রী পিছু দৈনিক বরাদ্দ ৪ টাকা ৯৭ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিকে সেটা ৭ টাকা ৪৫ পয়সা। এই সামান্য টাকায় মূল্যবৃদ্ধির বাজারে মাছ-মাংস তো ছাড়, ডিম, সয়াবিন, ডালের মতো পুষ্টিকর খাবার জোগাড় করতেও নাকাল দশা রাজ্য সরকারের।