বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রতিশ্রুতি মতোই বাংলার আবাস যোজনা (Awas Yojana) প্রকল্পে রাজ্যের যোগ্য উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী এই প্রকল্পে গত ১৭ ডিসেম্বর মোট ১২ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা।
আবাসে (Awas Yojana) তৃণমূল নেতার ‘টাকা দাবি’র ভিডিও ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা
টাকা দেওয়ার পর প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন এই প্রকল্পের (Awas Yojana) সুবিধা পেতে কাউকে যেন এক পয়সাও না দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর সেই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসছে তৃণমূল নেতাদের টাকা চাওয়ার অভিযোগের কথা।
আবাসের (Awas Yojana) টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার পর থেকেই বর্ধমান,উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদসহ একাধিক জেলায় এই অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও এই একই অভিযোগ করেছিলেন। এরই মধ্যে বীরভূমের দুবরাজপুরের এক গরিব অসহায় বৃদ্ধার কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার ভিডিও (সত্যতা যাচাই করেনি বাংলা হান্ট) ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
গ্রামের একটা কাঁচা বাড়িতে থাকেন ওই বৃদ্ধা। দিন আনা দিন খাওয়ার সংসারের কোনো রকমে ভিক্ষা করেই দিন কাটান তিনি। আবাস (Awas Yojana) প্রকল্পে বাড়ি তৈরীর টাকা ঢোকার পর তাঁর কাছে তৃণমূল নেতারাও টাকা চেয়েছেন বলে দাবি। যদিও পাল্টা ভিডিও দিয়ে তৃণমূল নেতার দাবি বিজেপি তাঁকে বদনাম করার চেষ্টা করছে।
ভিডিওটিতে বৃদ্ধাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত সভাপতি কাজল খান এবং পঞ্চায়েত উপপ্রধানের স্বামী তথা নেতা জাহাঙ্গীর নাকি তাঁক ডেকে বলেছিল, ‘বাড়ি পেয়েছ, এবার টাকা চাই। সবার থেকে ১০ হাজার নিচ্ছি।তোমার থেকে ৫ হাজার নেব।’ বৃদ্ধা জানান তিনি তো গরিব মানুষ। টাকা কোথায় পাবেন? কিন্তু অভিযোগ তারপরেও টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হয় ওই বৃদ্ধাকে।
আরও পড়ুন: পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের অধিকার আছে? কি বলছে ভারতীয় আইন?
অন্যদিকে বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি মোতাহার হোসেন খানের দাবি রাজ্যের শাসক দল ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করেছিল কেউ যেন গরিব উপভোক্তাদের থেকে কাটমানি না নেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। এমনকি বিজেপির দুই কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে সিপিএমের বীরভূম জেলা কমিটির সদস্য শীতল বাউড়ির কটাক্ষ,‘কাটমানি ছাড়া তৃণমূল, ভাবা যায় না। এটা তারই নমুনা।’
প্রসঙ্গত উপপ্রধানের স্বামী জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে পঞ্চায়েত মন্ত্রী কাজল খান পাল্টা ভিডিও দিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ‘ওরা বিজেপি করেন। তাই বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে শাস্তি মাথা পেতে নেব’। তৃণমূলের তরফে মারধরের অভিযোগও অস্বীকার করা হয়েছে। তৃণমূল নেতা কাজলের দেওয়া ভিডিওতে (বাংলা হান্ট যাচাই করেনি) দেখা যাচ্ছে, একজন বৃদ্ধা একটি চেয়ারে বসে বলছেন, ‘আমাকে চাপ দিয়েই ওই কথা বলানো হয়েছিল আমি ভুল করেছি’। এই ভিডিও দেখার পর অবশ্য বিজেপির দাবি, ‘চাপ’ দিয়েই বৃদ্ধাকে পরে অন্য কথা বলানো হয়েছে।