বাংলাহান্ট ডেস্ক : এতদিন দুর্গাপুজো ও দীপাবলির উপলক্ষে কলকাতা হাইকোর্টে ছুটি ছিল। তার ফলে কিছুটা সংবাদের শিরোনাম থেকে সরে গিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তিনি ধারাবাহিক ভাবে যে রকম রায় ও পর্যবেক্ষণ জানাতে শুরু করেছিলেন, তাতে অত্যন্ত চাকরিপ্রার্থীরা তাঁকে ভগবান ভাবতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ছুটির কারণে সব থেমে যায়। ছুটির পর আদালত খুলতেই আবার জোর কদমে শুরু হল সব কিছু।
সোমবার পুজোর ছুটির পর আদালত খুলতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ফের স্বমহিমায় দেখা গেল। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক পর্ষদকে (Primary Education Council) এদিন আবার তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। বিচারপতি এও বলেন,বাংলার যুব সমাজের কাছে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কতটা দুর্নীতিগ্রস্থ।
নেফা উর শেখ চৌধুরী নামে এক চাকরিপ্রার্থী ২০২১ সালে মামলা করেছিলেন হাইকোর্টে। তিনি আদালতে বলেন, ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দেন। ২০১৬ সালে তার ফল বেরোয়। তাতে তিনি সুযোগ পাননি। তারপর গত বছর আদালত নির্দেশ দেয় ভুল প্রশ্নের জন্য অতিরিক্ত ৬ নম্বর দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। সেই নম্বর পাওয়ার পর এই চাকরিপ্রার্থীর নম্বর যা দাঁড়ায় তাতে টেট পাশ করে পরবর্তী পরীক্ষায় সুযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি যখন পর্ষদের কাছে আর্জি জানান তখন আচার্য ভবন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কোনও ভাবেই তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। কারণ তাঁর বয়সের ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে গিয়েছে।
আদালতে এই চাকরিপ্রার্থীর আর্জি ছিল, সময়ে যদি সঠিক ফল বের হতো তাহলে তিনি সুযোগ পেতেন।সময় গড়িয়ে গেছে। তাঁর বয়স বেড়েছে। কিন্তু পর্ষদের ভুলের দায় তিনি কেন নেবেন?
এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, একটা চাকরির জন্য মেধাবী চাকরিপ্রার্থীরা দেওয়ালে মাথা ঠুকছেন আর পর্ষদের ভুলের জন্য যোগ্যদের বঞ্চিত হতে হচ্ছে। অযোগ্যরা চাকরি করে যাচ্ছেন। এদিন আদালত নির্দেশ দেয়, এই চাকরিপ্রার্থী নেফা উর শেখ চৌধুরীকে এক মাসের মধ্যে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিতে হবে। এবং তাী দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভাবে পর্ষদেরই।