“বাঁচাতেই হবে বাচ্চাগুলোকে, আর কিছু ভাবিনি,” জানালেন মালদার বন্দুকবাজকে রুখে দেওয়া আজহারউদ্দিন

বাংলাহান্ট ডেস্ক : এক যুবক হাতে বন্দুক নিয়ে ঢুকে পড়েছে স্কুলে। তার হাতে বন্দুক ও কাঁধে একটি ব্যাগ। সেই ব্যাগে রয়েছে সম্ভবত অ্যাসিড কিংবা পেট্রোল বোমা। ক্লাসে ঢুকে সেই ব্যক্তি ব্যাগ থেকে দুটি বোতল বার করে রাখে টেবিলের উপর। রীতিমতো ধমক দিয়ে চুপ করে থাকতে বলে পড়ুয়াদের। বন্দুকধারী ব্যক্তিকে দেখে রীতিমতো ভয় সিটিয়ে যায় ছাত্র-ছাত্রীরা। আজ এমনই ঘটনার সাক্ষী হল পশ্চিমবঙ্গের মালদা (Malda)।

ঘটনার খবর পেয়ে স্কুলে পৌঁছায় অভিভাবক ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। এমন অবস্থায় কিভাবে পরাস্ত করা হবে বন্দুকবাজকে সেই কথাই যখন সবাই ভাবছেন, তখন হঠাৎই নীল টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি ঝাঁপিয়ে পড়েন বন্দুকবাজের ওপর। নীল টি-শার্ট পরা ব্যক্তিটি বন্দুকবাজ ব্যক্তিটিকে নিয়ে পড়ে যান মাটিতে। এরপর বাকিরা এসে নিরস্ত করে ওই ব্যক্তিকে। এই ঘটনা হার মানাবে যে কোনো সিনেমার চিত্রনাট্যকে।

মালদহের মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুল
বুধবার সাক্ষী থাকলো এমনই হাড়হিম করা এক ঘটনার। জানা গিয়েছে ওই নীল টি-শার্ট পরা ব্যক্তিটি পুলিশের ডিএসপি। তার নাম আজাহারউদ্দিন খান। নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন বন্দুকবাজের উপর। এর ফলে হাতে সামান্য চোটও পান তিনি। এত পড়ুয়াকে প্রাণে রক্ষা করার পর আজহারউদ্দিন কিন্তু খুব একটা বেশি কিছু বলতে চাননি।

তিনি শুধু বলেছেন, “স্বাভাবিক এটা। এটা করতে পেরেছি আল্লাহর রহমত ছিল বলে।” একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমিকে ডিএসপি আজহারউদ্দিন আজ বলেন, “কোনও ভাবেই আমি প্রস্তুত ছিলাম না। এই ঘটনার আচমকা ইনফরমেশন আসে। খবর পেয়ে পৌঁছে যাই।” তিনি যখন পুলিশের কর্মী তাহলে পুলিশের পোশাক পড়ে কেন পৌঁছাননি ঘটনাস্থলে?

img 20230426 202744

আজহারউদ্দিন বলেন, তিনি পুলিশের পোশাকেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে দেখেন যে বন্দুকবাজ পুলিশ দেখলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন সাধারণ জামা ও চটি পড়বেন। এর আগে এই ধরনের কোনও অপারেশন কি তিনি করেছেন? প্রস্তুতি নিলেন কিভাবে? ডিএসপির উত্তর, “বন্দুকের সামনে এর আগে কখনো ঝাঁপাইনি। এইবার ৭০ টা বাচ্চার জীবন আমার হাতে ছিল। দ্বিতীয়বার কিছু ভাবিনি। ঝাঁপ দিই ওদের রক্ষা করার জন্য।”


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর