বাংলা হান্ট ডেস্ক : যুদ্ধের দামামা বেজে গেছে ত্রিপুরায় (Tripura)। সে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এদিনের ভাষণে ডবল ইঞ্জিন সরকারের গুণগান এবং বাম ও কংগ্রেসকে আক্রমণ, এই দুই কৌশল নিলেন নমো। অদ্ভুতভাবে এক বারের জন্যও নামই নিলেন না তৃণমূলের। মোট ৬০ টি আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় ২৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বাংলার শাসকদল। সে রাজ্যে প্রচারেও গিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শনিবার প্রধানমন্ত্রী সে রাজ্যের আমবাসার সভায় ‘তৃণমূল’ শব্দটি এক বারের জন্যও আসেনি। বরং তাঁর বক্তব্যে বার বার ফিরে এসেছে বাম এবং কংগ্রেসের প্রসঙ্গ।
এদিনের জনসভা থেকে গত ৫ বছরে ত্রিপুরা কীভাবে বদলে গিয়েছে, তার খতিয়ানই তুলে ধরেছেন মোদি। সেই উন্নয়ন ব্যক্ত করতে গিয়ে ‘হীরা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। তার পর ইংরেজি বানান ধরে ধরে তিনি বলেন, ‘এইচ ফর হাইওয়ে, আই ফর ইন্টারনেট, আর ফর রোডওয়েজ, এ ফর এয়ারওয়েজ। এই চারটে জিনিসে ভর করেই আমুল বদলে গিয়েছে ত্রিপুরা।’ বিজেপির শাসনে রাজ্যে জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ, ফোরজি ইন্টারনেট পরিষেবা, আগরতলায় অত্যাধুনিক বিমানবন্দর কী ভাবে রাজ্যের মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিয়েছে, তাও তুলে ধরেন মোদি।
ত্রিপুরার উন্নতির জন্য তিন শক্তির উপর জোর দেন নমো। এই তিন শক্তি হল আবাস, আরোগ্য এবং আয়। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে ৩ লক্ষ মানুষ পাকা বাড়ি পেয়েছেন বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো বৃদ্ধি এবং আয়ুষ্মান ভারতের সাফল্যের কথাও ফলাও করে বর্ণনা করেন তিনি। গত ৫ বছরে রাজ্যের মানুষের আয় বেড়েছে এ কথা দাবি করে মোদি। তিনি আরও জানান, তাঁদের দল ত্রিপুরার সরকারে আসার পর সপ্তম বেতন কমিশনের মাধ্যমে বর্ধিত হারে বেতন পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা।
এিপুরায় টানা ২৫ বছর চলেছিল বাম শাসন। সেই সময়কালকে ‘চাঁদার জমানা’ বলে উপহাস করেন নমো। আগের বাম সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বাম আমলে সব কিছুতেই জনগণের থেকে চাঁদা নেওয়া হত। একই সঙ্গে তিনি আক্রমণ করেন কংগ্রেসকেও। বাম আমলে শুধু দলীয় সমর্থকদের জন্য উন্নয়ন হত বলে দাবি করে মোদি জানান, বিজেপি সকলের জন্য উন্নয়ন করে। ত্রিপুরাবাসীর কাছে মোদি আবেদন করে জানিয়ে বলেন, ‘জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত দুই দল আবার হাত মিলিয়েছে। মাথায় রাখবেন, ওদের একটাও ভোট দেওয়া মানে ত্রিপুরাকে আবার খানিকটা পিছিয়ে দেওয়া।’
ত্রিপুরায় জনজাতি ভোটের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে এদিনের বক্তৃতায় তাদের বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করেন মোদি। কংগ্রেস আমলের তুলনায় তাঁর সরকারের আমলে আদিবাসী এবং দলিতদের জন্য কত বেশি অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, তার খতিয়ানও তুলে ধরেন নমো। আলাদা ভাবে উল্লেখ করেন সমাজকর্মী বিক্রম বাহাদুর জামাতিয়ার নামে, যাঁকে এ বছর কেন্দ্রীয় সরকার পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করেছে।