বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সমাজ এবং সভ্যতা দ্রুত হারে পাল্টাচ্ছে। তার সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে মানসিকতারও। এমনিতেই আমরা প্রায়শই দেখতে পাই যে, একাধিক পারিবারিক হিংসাত্মক ঘটনার প্রসঙ্গ উঠে আসে খবরের শিরোনামে। এমনকি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো পারিবারিক সম্পত্তির জেরে নিজের বাবাকেও খুন করার মত ঘটনা একাধিক জায়গায় ঘটেছে। ঠিক সেই আবহেই এবার এক অভিনব ঘটনা সামনে এল। যা শোনার পর আবেগাপ্লুত হবেন আপনিও।
মূলত কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন এবং শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের ভোজের মাধ্যমে সমস্ত কার্যাবলী সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিহারের মধুবনী জেলার এক ব্যক্তি তাঁর বাবার মৃত্যুর পরে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের ভোজের পরিবর্তে সকলের সুবিধার্থে তৈরি করে দিলেন এক সেতু। যেটি বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন ওই ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে যে, কালুয়াহি ব্লকের নারার পঞ্চায়েতের ২ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে কোনো সেতু না থাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রবল অসুবিধার সম্মুখীন হতে হত স্থানীয় বাসিন্দাদের। এমনকি, তাঁরা ক্ষুব্ধও হয়ে উঠেছিলেন। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হত বর্ষাকালে। এমতাবস্থায়, মহাদেব ঝা নামের গ্রামেরই এক বাসিন্দা একটি সেতু তৈরি করতে অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, সেই কাজ করার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। যদিও, মহাদেবের সেই ইচ্ছে পূরণ করলেন তাঁর ছেলে সুধীর ঝা।
এই প্রসঙ্গে সুধীর জানান, বাবার মৃত্যুর পর তাঁর মনে হয়েছিল, আচার-অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক টাকা খরচ না করে মানুষের দুর্ভোগ কাটাতে ওই সেতুটি তৈরি করা উচিত। পাশাপাশি, এই প্রসঙ্গে সুধীরের মা মহেশ্বরী দেবী জানান, তাঁর স্বামী পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০২০ সালে মারা যান। তাঁর ইচ্ছা ছিল তাঁর শ্রদ্ধানুষ্ঠানের ভোজের খরচের পরিবর্তে গ্রামে যেন একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। তাঁর ইচ্ছা পূরণ করেই এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে, স্বাভাবিকভাবেই সুধীরের এই মহতী কাজ সকলের মন জিতে নিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও সুধীরের এই উদ্যোগে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। পাশাপাশি, তাঁরা জানিয়েছেন, সুধীর সমাজের অন্যান্য মানুষকে নতুন পথ দেখিয়েছেন। এছাড়াও, বর্ষার দিনে যে ভোগান্তির শিকার হতে হত সেই সমস্যাও এবার মিটে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।