বাংলা হান্ট ডেস্ক: সম্প্রতি তুরস্কের (Turkey) একটি পুরোনো দুর্গ খননের সময় সন্ধান মেলে কয়েকশ বছরের একটি মন্দিরের। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার ফের একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে মিলল প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, এবার ইরানের (Iran) একটি ঐতিহাসিক স্থানে খননের সময়ে প্রত্নতাত্ত্বিকরা একটি প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই মন্দিরটিকে প্রাচীন ইরানের অন্যতম শক্তিশালী সাম্রাজ্য সাসানিদ সাম্রাজ্যের বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত, উত্তর-পূর্ব ইরানে খননের সময় প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন এই মন্দিরে ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন। এমতাবস্থায়, তাঁরাও এই ধ্বংসাবশেষ দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত। এদিকে, ওই ঐতিহাসিক স্থানটি খননের প্রসঙ্গে প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন যে, এই আবিষ্কারটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে প্রাচীন ইরানের শিল্প ও ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় সামনে আসতে পারে।
ইরানের একটি গ্রামের কাছে খননকাজ চলছে: গত সোমবার ইরানে ওই স্থানটি খননকারী দলের সাথে জড়িত একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ মীসাম লাব্বাফ খানিকি জানিয়েছেন যে, উত্তর-পূর্ব ইরানের একটি গ্রামের কাছে থাকা প্রাচীন স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ খনন কাজ চালাচ্ছে। খননকালে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের দল সাসানিদ সাম্রাজ্যের একটি অগ্নি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে। এর পাশাপাশি দলটি প্রাচীন চিত্রকলার সাথে সম্পর্কিত কিছু জিনিসও খুঁজে পেয়েছে। যা বেশ সুন্দর বলে জানা গেছে।
ইরানের শিল্পের ইতিহাস জানার সম্পর্কে এটা ভালো সুযোগ: অনুসন্ধানের সময়, জিওমেট্রিক প্ল্যান্ট দ্বারা সজ্জিত প্লাস্টারওয়ার্কের অনেক বিষ্ময়কর টুকরোও পাওয়া গেছে। সেইসব একত্র করে এটা স্পষ্ট যে, ওই স্থানের একটি ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিকও রয়েছে। এই প্রসঙ্গে মীসাম লাব্বাফ খানিকি বলেছেন, ওই স্থান থেকে যা কিছু আবিষ্কার করা হয়েছে, সেগুলি সাসানিদ সাম্রাজ্যের সময়কার ইরানের শিল্পের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়।
পাশাপাশি প্রত্নতাত্ত্বিক আরও বলেন, খননের ফলে সন্ধান পাওয়া অগ্নি মন্দিরে কোনো এক সময়ে হাইপোস্টাইল হল ছিল। সেই সময় মন্দিরের ওই হলটি নিশ্চয়ই বিভিন্ন ধরণের খোদাই দিয়ে সজ্জিত ছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সাল থেকে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা সাসানিদ সাম্রাজ্যের স্মৃতিস্তম্ভটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অধ্যয়ন করার জন্য বিভিন্ন সার্ভে পরিচালনা করছে। মূলত, ইরানের ইতিহাসে ওই আমলের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পার্সি স্থাপত্য ও শিল্পকলার পুনরুজ্জীবন সাসানিদের আমলেও হয়েছিল। এদিকে, প্রাচীন ইরানে সাসানিদ সাম্রাজ্যের সময় যা কিছু কাজ করা হত তা পাহলভিতে করা হত। এটি সাসানিদ সাম্রাজ্যের ভাষা ছিল এবং সেই সাম্রাজ্য থেকে আগত সকল মানুষ এটি ব্যবহার করত বলেও জানা গিয়েছে।