বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিপুল ভোটে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। দুশো আসলে জয় লাভের স্বপ্ন নিয়েও শেষ পর্যন্ত মাত্র 77-এ থমকে যায় রাজ্য বিজেপি আর এরপর থেকেই ধীরে ধীরে বিজেপি ছেড়ে শাসক দলে নেতা-নেত্রীদের প্রত্যাবর্তনের হিড়িক পড়ে যায়। রাজীব ব্যানার্জি, মুকুল রায়, বাবুল সুপ্রিয় থেকে শুরু করে বর্তমানে অর্জুন সিং পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেন আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপি দলের সংগঠন এবং আত্মবিশ্বাস ক্রমশই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
বর্তমানে পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় হয়ে পড়েছে যে, নিজের দলের নেতাদেরই বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না বিজেপি নেতৃত্বে। সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের একটি অডিও ঘিরে সেই তত্বই উঠে এসেছে সামনে। সদ্য আসানসোল উপনির্বাচনে জিতেন্দ্র তিওয়ারি আদৌ বিজেপির হয়ে কাজ করেছিলেন কিনা, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলে দেন নেত্রী। উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন জিতেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত আসানসোল উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার কাছে পরাজিত হন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। উল্লেখ্য, অতীতে আসানসোল কেন্দ্রে পরপর দুইবার লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্রে জয়লাভ করে বিজেপ। কিন্তু সেখানে এবার তৃণমূল প্রার্থীর কাছে প্রায় 3 লক্ষর বেশি ভোটে পরাজিত হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে যায় আর এরপর থেকেই সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন অগ্নিমিত্রা। সেই সূত্র ধরেই সম্প্রতি একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে এক মহিলাকে বলতে শোনা গেছে, “উপনির্বাচনের সময় জিতেন্দ্র তিওয়ারি’দার ভূমিকা কী রকম ছিল? উনি কী দলের হয়ে কাজ করেছেন, নাকি বিরোধিতা করেছেন? সেটা জানতে চাইছি।”
স্বভাবতই, এরপর গোটা দলের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চায়নি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এদিন শেষ পর্যন্ত মুখ খোলেন বিজেপি নেত্রী। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, “আমি প্রশ্ন করেছিলাম যে, জিতেন্দ্র তিওয়ারির কী ভূমিকা ছিল? আসলে আসানসোলে বিজেপি দলের প্রতি মানুষের যেরকম সমর্থন ছিল, সেই অনুযায়ী আমাদের এই কেন্দ্রে 30 থেকে 40 হাজার ভোটে জেতা উচিত ছিল। কিন্তু যেভাবে আমরা পরাজিত হই, সেখানেই সকলের মনে প্রশ্ন উঠে যায়। তাই আমি জানতে চাই যে, সেখানে নেতৃত্বরা কিরকম ভূমিকা পালন করেছিলেন?” তবে এদিন দলে অন্তর্ঘাত প্রসঙ্গ উড়িয়ে তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে অন্তর্ঘাত হয়েছে, এটা ঠিক নয়।” তবে অগ্নিমিত্রা পালের এই বক্তব্যের পরেও দলের ভিতরে কোন্দল স্পষ্ট চেহারা নিয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।