বাংলাহান্ট ডেস্ক: দু সপ্তাহ হতে চলল, ‘নেই’ হয়ে গিয়েছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)! দীর্ঘ লড়াই শেষে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। পেছনে তাঁর স্মৃতি আঁকড়ে রয়ে গিয়েছেন বাবা, মা, দিদি, সবথেকে প্রিয় মানুষ সব্যসাচী। তাঁর লড়াইয়ের সময়ে একজোট হয়ে প্রার্থনা করেছিলেন সকলে। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পরেও তিনি রয়ে গিয়েছেন সবার মনে, আর চিরকালই থাকবেন।
ঐন্দ্রিলা শর্মা মানেই অদম্য জেদ, লড়াইয়ের প্রতিমূর্তি। বরাবর ইতিবাচকতা, আশার বার্তা দিয়ে এসেছেন তিনি। দু দুবার হারিয়েছেন ক্যানসারকে। তবুও পরীক্ষার সাধ মেটেনি বিধাতার। তৃতীয় বারেও হয়তো পরীক্ষাটা উতরে যেতেন ঐন্দ্রিলা, অন্তত তেমনি বিশ্বাস ছিল তাঁর মায়ের। কিন্তু কিছু চিকিৎসকে র ইগোর লড়াই ফিরতে দিল না ঐন্দ্রিলাকে, আক্ষেপ মা শিখা শর্মার।
ঐন্দ্রিলার জীবন এবং লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় বিমা কর্মীরা। ঐন্দ্রিlife সন্ধ্যা নামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সম্প্রতি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত অভিনেত্রীর মা। ওই অনুষ্ঠানেই তিনি বলেন, হাসপাতালের বিরুদ্ধে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। খুব ভাল চিকিৎসা হচ্ছিল, যিনি অস্ত্রোপচার করান তিনিও খুব ভাল ছিলেন। কিন্তু কয়েকজন চিকিৎসকের ইগোর লড়াই ঐন্দ্রিলার এই পরিণতি করল বলে অভিযোগ করেন শিখা শর্মা।
ঐন্দ্রিলার মা নিজেও একজন নার্সিং স্টাফ। বাবা, দিদি দুজনেই চিকিৎসক। শিখা শর্মা বলেন, ঐন্দ্রিলার ফুসফুস এবং কিডনি একদম ভাল ছিল। হৃদরোগে আক্রান্ত হলেও সুস্থ করা যেত। কিন্তু এক দুজন চিকিৎসকের ইগো ফিরতে দিল না ঐন্দ্রিলাকে।
এদিন এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শিখা শর্মা জানান, ঐন্দ্রিলার স্বপ্নগুলো অন্যরকম ছিল। বহরমপুরে বৃদ্ধাশ্রম, অনাথাশ্রম করার ইচ্ছা ছিল তাঁর। মেয়ের ইচ্ছাপূরণে তাঁরাও সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। সব্যসাচীর সঙ্গে একটি ক্যাফে খোলারও পরিকল্পনা করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। খুব হিসেবি ছিলেন তিনি। টাকা জমিয়ে রাখতেন, বাজে খরচ মোটে করতেন না।
ঐন্দ্রিলার আদরের দুই পোষ্য বোজো তোজোও মুষড়ে পড়েছে। কলিং বেল বাজলেই মা এসেছে ভেবে ছুট লাগাচ্ছে। বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ঐন্দ্রিলার মা, বড় মেয়ে ডাক্তার হলেও ছোট মেয়েই ছিল পরিবারের মেরুদণ্ড। ঐন্দ্রিলার বাবা তাঁকে জিজ্ঞাসা না করে কোনো কাজ করতেন না। কিন্তু ঐন্দ্রিলা না থাকলেও তাঁর স্বপ্নগুলো পূরণ করবেন তাঁরা, কথা দিয়েছেন মা শিখা শর্মা।