রাখে বড়মা তো মারে কোন? সুস্থ হচ্ছেন ঐন্দ্রিলা, সুখব‍র দিলেন সব‍্যসাচী

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বহু প্রতীক্ষিত সুখবর এল অবশেষে। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ঐন্দ্রিলা শর্মার (Aindrila Sharma)। দুদিন উদ্বেগের মধ‍্যে থাকার পর শেষমেষ আশার খবর শোনালেন সব‍্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। সোশ‍্যাল মিডিয়ায় একটি বড় পোস্টে ঐন্দ্রিলার এই কদিনের স্বাস্থ‍্য সংক্রান্ত আপডেট দিলেন সব‍্যসাচী। সেই সঙ্গে অনেক কিছুর উত্তরও দিলেন তিনি।

সব‍্যসাচী লিখেছেন, ‘পরশুদিন সকালে ঐন্দ্রিলার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, চোখের সামনে দেখলাম ওর হার্টরেট ড্রপ করে চল্লিশের নিচে নেমে তলিয়ে গেলো, মনিটরে ব্ল্যাঙ্ক লাইন, কান্নার আওয়াজ, তার মাঝে ডাক্তাররা দৌড়াদৌড়ি করছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে হৃদস্পন্দন ফের ফিরে এলো বিভিন্ন সাপোর্টে, হার্টবিট ১২০।

Aindrila
তারপরই কে যেন একটা অদৃশ্য বালিঘড়ি উল্টো করে ঝুলিয়ে দিলো, ঝুরো বালির মতন সময় ঝরে পড়ছে, সাথে স্থিরভাবে একটা একটা করে হার্টবিট কমছে, কমছে রক্তচাপ, কমছে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস। ডাক্তাররা জবাব দিয়েছেন, হসপিটালের নিচে পুলিশ পোস্টিং, বিভিন্ন বিশিষ্ট মানুষ এসে সমবেদনা জানাচ্ছেন, কিছু উত্তেজিত ইউটিউবার এবং মিডিয়ার লোকজন নিচে ঘোরাঘুরি করছেন। শেষ চেষ্টার জন্য অন্য হাসপাতালের এক নামকরা নিউরোসার্জনকে ডেকে আনা হলো, তিনি খানিক নাড়াচাড়া করে জানালেন যে “ও চলে গেছে অনেক আগেই, শুধুশুধু এইভাবে আটকে রাখছেন কেন? এমনিতেও কালকের মধ্যে সব থেমেই যাবে।
লেট্ হার গো পিসফুলি”।’

লেখার প্রতিটা লাইনে প্রকাশ পেয়েছে সব‍্যসাচীর অসহায়তা। একটা সময় সত‍্যিই হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়েছিল। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবরা দেখা করে গিয়েছিলেন। এমনকি সোশ‍্যাল মিডিয়াতেও মাঝরাতে ছড়িয়ে গিয়েছিল, ঐন্দ্রিলা আর নেই। সঙ্গে সঙ্গে ফোনের পর ফোন। শেষমেষ সব‍্যসাচী নিজে পোস্ট করতে বাধ্য হন।

তার পরের দিন থেকে আবারো রক্তচাপ কমতে শুরু করে ঐন্দ্রিলার। সারাদিন ধরে অনেকেই এসে কান্নাকাটি করে গিয়েছেন ঐন্দ্রিলার পাশে বসে। সব‍্যসাচী লিখেছেন, ‘বিকেলের পর দেখলাম হাত, পা, মুখ ফুলছে ঐন্দ্রিলার, শরীর ঠান্ডা। হার্ট রেট কমতে কমতে ৪৬, বিপি ৬০/৩০। আগের দিনের ডাক্তারের কথাটা কেবলই আমার মাথায় ঘুরছিলো, ওর শরীরটাকে এভাবে আটকে রাখার জন্য নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে, থাকতে না পেরে ওর মাকে বললামও যে এত কষ্ট আর দেখতে পারছি না, কি দরকার ছিল এত কিছু করার, শান্তিতে যেত। মুখে বলছি বটে, কিন্তু ছাড়তে কি আর পারি, মায়ার টান বড় কঠিন।’

Sabyasachi aindrila
এর পরেই হয় মিরাক‍্যল। সেদিন রাতে হঠাৎ হাত নড়ে ওঠে ঐন্দ্রিলার। হার্টরেট এক লাফে ৯১, রক্তচাপ বেড়ে ১৩০/৮০, শরীর ক্রমশ গরম হচ্ছে। সব‍্যসাচীর কথায়, ‘এক প্রকার অনন্ত শূন্য থেকে এক ধাক্কায় ছিটকে ফিরে এলো মেয়েটা। গেছে বললেই ও যাবে না কি, যেতে দিলে তো যাবে।’  তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ঐন্দ্রিলা একপ্রকার সাপোর্ট ছাড়াই আছেন। এমন কি ভেন্টিলেশন থেকেও বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।

সম্প্রতি অভিনেতা চক্রবর্তী একটি পোস্টে প্রশ্ন করেছিলেন, ঈশ্ব‍র কি ফেসবুকে আছেন? নাম না করে তাঁকেও উত্তর দিয়েছেন সব‍্যসাচী। সেই সঙ্গে তিনি আর্জি জানিয়েছেন, চিকিৎসার খরচ নিয়ে লেখালিখি বন্ধ করা উচিত। এখনো পর্যন্ত কারোর কাছ থেকেই অর্থ সাহায‍্য চাওয়া হয়নি বা নেওয়াও হয়নি। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, একজন মানুষ অসুস্থ হলে যেভাবে পাশে দাঁড়ানো দরকার সেটাই তিনি করেছেন। সেই সঙ্গে সব‍্যসাচী ধন‍্যবাদ জানিয়েছেন অরিজিৎ সিংকে। চিকিৎসার বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।


Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর