বাংলাহান্ট ডেস্ক: চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছিল ঐন্দ্রিলা (aindrila sharma) ও সব্যসাচীর (sabyasachi chowdhury) লড়াই। ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জিততে নেমেছিলেন ঐন্দ্রিলা। আর শক্ত খুঁটি হয়ে প্রেমিকাকে আঁকড়ে রেখেছিলেন সব্যসাচী। দশ মাস পর অবশেষে এল বহু প্রতীক্ষিত সুখবর। তাঁদের লড়াই সফল হয়েছে। ক্যানসার মুক্ত হয়েছেন অভিনেত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় সব্যসাচী সুখবর জানাতেই উচ্ছ্বাসের বান ডেকেছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয় বার ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে কার্যত ভেঙে পড়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। ক্যামেরার সামনেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেছিলেন। মন ভেঙে গিয়েছিল তাঁর অনুরাগীদেরও। সেই শুরু যুদ্ধের। মারণ রোগের কঠিন চিকিৎসার যন্ত্রণা সহ্য করেও যতটা সম্ভব হাসিমুখে থেকেছেন ঐন্দ্রিলা। প্রথম দিন থেকে ছায়ার মতো তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থেকেছেন সব্যসাচী। আর দূরে থেকেও অনুরাগীরা কেউ অভিনেত্রীর সুস্থতা চেয়ে ঈশ্বরের কাছে মানত করেছেন, কেউ নাগাড়ে প্রার্থনা করে গিয়েছেন।
ভক্তদের কথা মাথায় রেখেই প্রত্যেক মাসের শেষে ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খবরাখবর জানাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কলম ধরতেন সব্যসাচী। এবারে আন্দের সঙ্গে জানালেন ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে এটাই তাঁর শেষ লেখা। কারণ ডিসেম্বরেই অভিনেত্রীর চিকিৎসা সম্পূর্ণ হবে। আগামী বছরেই কাজে ফেরার কথাও সব্যসাচীকে জানিয়েছেন ঐন্দ্রিলা।
অভিনেতা লিখেছেন, ‘ঐন্দ্রিলার সাথে আমার আলাপ চার বছর আগে কিন্তু এর মাঝে আমরা কোনোদিনও সেভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি পোস্ট করিনি। কাপল্ ফটোশুট, টিকটক ভিডিও, বুমেরাং ইত্যাদি যা সব হয় আর কি, কখনও করিনি আমরা। আর সত্যি বলতে, আমি এগুলো করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। উনি অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন, তবে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তেমন নয়।
সিনেমার গল্প ভালোবাসো নিশ্চয়, তাহলে বাস্তবের গল্পটাও শোনো। ১৪ই ফেব্রুয়ারী নাকি ভালোবাসার দিবস, আমি বড়ই কাঠখোট্টা মানুষ, এসব বিশেষ দিনে কিছুই করি না কখনও। কিন্তু এই বছর, এই প্রথমবার তিনি বায়না করেছিলেন যে দিনটি মাসের দ্বিতীয় রবিবার, তাই দুজনেরই ছুটি, অতএব রাতে রেস্টুরেন্টে খেতে যেতে হবে।
ভালো কথা, টেবিল বুক করা হলো, বললো দুপুরে একটু ঘুমাচ্ছি, উঠে তৈরী হবো। ঘুমালো কিন্তু আর উঠতে পারলো না। পিঠের যন্ত্রনায় পরিত্রাহি চিৎকার করছে, এদিকে আমি বুঝতেই পারছি না যে কি হয়েছে। অগত্যা খেতে যাওয়া বাতিল করে আমি নিজেই রান্না করে খাওয়ালাম, তখনও আমরা ভাবছি যে পিঠের মাংসপেশিতে টান লেগেছে বোধহয়।
পরের দিন জানা গেলো ছয় বছর আগের সেই কালসদৃশ অসুখ আবার ফিরে এসেছে এবং ফুসফুসে এক লিটার রক্ত জমেছিলো, আমরা কেউ তা বুঝিনি। এর পর থেকে, আমাদের জীবনে আর কোনও নির্দিষ্ট ভালোবাসার দিন নেই। জীবনেও তা পালন করবো না।’
দীর্ঘ চিকিৎসা, অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপির জয় হল ঐন্দ্রিলারই। সব্যসাচী জানিয়েছেন, ‘কিছুদিন আগে, অস্ত্রোপচারের ঠিক ছয় মাস পর পুনরায় পরীক্ষা করা হয় ওকে। ডাক্তার জানিয়েছেন যে কোনও বদ কোষ অবশিষ্ট নেই ওর শরীরে। এই মুহূর্তে, ঐন্দ্রিলা সুস্থ এবং বিপদমুক্ত।
তবে ডিসেম্বরের শেষ অবধি কেমোথেরাপি চলবে ঐন্দ্রিলার। চলতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই। কড়া ওষুধপত্রের জেরে অভিনেত্রীর ওজন কিছুটা বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন সব্যসাচী। তবে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে ওজন কমিয়ে সুস্থ হয়ে আগামী বছর ক্যামেরার সামনে ফিরবেন তিনি।