বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিন, মাস, বছর যায় জলের মতো। একটা মাসও কেটে গিয়েছে চোখের নিমেষে। অন্তত ইন্ডাস্ট্রির বাকিদের কাছে ব্যাপারটা তেমনি। কিন্তু প্রয়াত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার (Aindrila Sharma) পরিবারের কাছে এই এক মাসও যেন এক বছরের সমান। এই বছরটা ঐন্দ্রিলার পরিবারের কাছে সবথেকে বড় ঝড়টা নিয়ে এসেছিল। বছর শেষ হওয়ার মাত্র দু মাস আগেই গোটা পরিবারটাকে তছনছ করে দিয়ে বিদায় নেন ঐন্দ্রিলা।
ছোট থেকেই লড়াই করে বড় হয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর অদম্য জেদ, শক্ত মানসিকতা অচিরেই নজর কেড়ে নিয়েছিল সবার। অভিনেত্রী হওয়ার নিজের লক্ষ্যটাও পূরণ করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। দ্বিতীয় বার ক্যানসারকে হারিয়ে জীবনের মূল স্রোতে ফিরেছিলেন। সবটা ঠিক ছিল। হঠাৎ করেই দমকা ঝড়ে এলোমেলো হয়ে গেল সবকিছু।
বহরমপুরের মেয়ে ঐন্দ্রিলা। কলকাতায় এক অভিজাত আবাসনে থাকতেন তিনি পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু ছোট মেয়ের অকালমৃত্যুর পর কলকাতার ফ্ল্যাটে আর টিকতে পারছেন না অভিনেত্রীর বাবা মা। তাই বহরমপুরের বাড়িতেই ফিরে গিয়েছেন ঐন্দ্রিলার বাবা মা।
প্রয়াত অভিনেত্রীর মা জানান, মিষ্টি অর্থাৎ ঐন্দ্রিলা খুবই দুষ্টু ছিলেন। কিন্তু গান, বাজনার দিকে খুব ঝোঁক ছিল তাঁর। ঠাকুর দেবতাতেও ছিল ভক্তি। গোপাল ভালবাসতেন ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রীর মা শিখা শর্মা বলেন, হয়তো সেই কারণেই ঈশ্বর তাঁকে এত তাড়াতাড়ি নিজের কাছে টেনে নিলেন।
বাড়ির সবথেকে কনিষ্ঠ সদস্যা হলেও ঐন্দ্রিলাই বাড়ি মাতিয়ে রাখতেন। তাঁর প্রয়াণের পর যেন ছন্নছাড়া ভাব হয়েছে পরিবারে। কেউই ভাল নেই। ঐন্দ্রিলার দিদি রয়েছেন বাইরে। চিকিৎসক বাবা থাকেন চেম্বারে। একা মন টেকে না হতভাগ্য মায়ের। সোশ্যাল মিডিয়াতেই মেয়েকে স্মরণ করে মন উজাড় করে দেন তিনি। মায়ের স্বপ্নে আসেন ঐন্দ্রিলা।
অভিনেত্রীর মা বলেন, কলকাতার ফ্ল্যাটে তাঁর আর ফিরতে ইচ্ছা করে না। তবুও একদিন তাঁকে ফিরতে হবেই, ঐন্দ্রিলার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে ফোন করে তিনি মাকে বলেছিলেন, প্রচুর শাড়ি হয়ে গিয়েছে। রাখার জায়গা নেই। একটা ওয়ার্ড্রোব লাগবে। শাড়িগুলো গুছিয়ে দেওয়ারও আবদার করেছিলেন তিনি। ঐন্দ্রিলা নেই, কিন্তু তাঁর আবদার ঠিকই রাখবেন মা।