বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিতর্কেই লক্ষ্মীলাভ। এই বিশ্বাস নিয়েই এগিয়ে চলেছে বলিউড। সাম্প্রতিক দ্য কেরালা স্টোরির (The Kerala Story) পর নতুন দু দুটি ছবি ঘোষণা করা হয়েছে। দুটিই নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেবে বলে মনে করছেন সিনেপ্রেমীরা। এই মুহূর্তে চর্চায় রয়েছে আসন্ন ছবি ‘আজমের ৯২’ (Ajmer 92)। মুক্তির ঢের আগেই ছবিটি বয়কট করার ডাক উঠেছে।
বরেলিতে অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের রাষ্ট্রীয় অধ্যক্ষ মৌলানা মুফতি শাহাবুদ্দিন রাজভি বরেলভির দাবি, এই ছবি মুক্তি পেলে সমাজে ভাঙন ধরবে। এই ছবির মাধ্যমে ভুল বোঝানো হবে মানুষকে। তাই অবিলম্বে ছবিটি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু আজমের ৯২ ছবিটিতে কী এমন রয়েছে যে এত বিতর্ক, এত শোরগোল? ছবিটি নিষিদ্ধ করার জন্য কেন উঠেপড়ে লেগেছে মুসলিম সংগঠনগুলি? শোনা যাচ্ছে, ১৯৯২ সালে আজমেরে ঘটে যাওয়া ২৫০ জনেরও বেশি মেয়ের উপরে বীভৎস গণধর্ষণের ঘটনা উঠে আসতে চলেছে এই ছবিতে। আর তা জেনেই তীব্র আপত্তি প্রকাশ করেছে ধর্মীয় সংগঠনগুলি।
আসলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, ৯২ তে রাজস্থানে একটি গ্যাং স্কুলছাত্রী এবং কলেজছাত্রীদের নিশানা করত। তাদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হত। শুধু তাই নয়, ছবি তুলে রেখে তাদের ব্ল্যাকমেল করে বারবার পাশবিক অত্যাচার করা হত তাদের উপরে। ঘটনা হচ্ছে, কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল আজমের শরিফের সঙ্গে যোগ থাকা ফারুক চিস্তি এবং নাফিস চিস্তি যুক্ত ছিলেন ওই ঘটনার সঙ্গে। সে সময়ও বিষয়টা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল আজমের।
মৌলানা মুফতি শাহাবুদ্দিন বলেন, খোয়াজা মইনুদ্দিন চিস্তি আজমেরির দরগা হিন্দু মুসলিম ঐক্যের প্রতীক। দরগা থেকে দশকের পর দশক ধরে শান্তি এবং ঐক্যের বার্তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আজমের ৯২ এর মতো ছবি সমাজে এই একতার ছবিকে নষ্ট করে দিতে চাইছে বলে দাবি মৌলানার। ঘৃণা ছড়ানোর জন্য সিনেমা এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে ঢাল বানানো হচ্ছে বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। কোনো ছবির পরিচালকেরই অধিকার নেই খোয়াজা মইনুদ্দিন চিস্তি দরগাকে অসম্মান করার, সাফ বক্তব্য তাঁর।
আজমের ৯২ এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন জামিয়াতুল উলমা ই হিন্দের জেনারেল সেক্রেটারি নিয়াজ আহমেদ ফারুকি। পরপর ছবির নাম মুসলিমদের প্রসঙ্গ টেনে রাখা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সুর ছড়িয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, এভাবে দুই ধর্মের মধ্যে দেওয়াল তুলে ভ্রাতৃত্ববোধকে নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, দাবি নিয়াজের।
তিনি আরো বলেন, এই ছবির বিরুদ্ধে তাঁরা নন। কিন্তু কোনো এক সম্প্রদায়কে বারংবার নিশানা করাটা একেবারেই অনুচিত। আইন মেনে এই ছবি নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত। উল্লেখ্য, আগামী ১৪ জুলাই মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে আজমের ৯২।