বাংলাহান্ট ডেস্ক : ছোট থেকেই অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। আর্থিক সঙ্কট আরও বাড়ে বাবার মৃত্যুর পর। তারপর থেকেই ডাক্তার হওয়ার জেদ চেপে বসেছিল মনে। সেই জেদের জোরেই সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় (NEET Exam) দারুণ সাফল্য অর্জন করল আলিপুরদুয়ারের দীপজ্যোতি সরকার। নিজের স্বপ্নের দিকে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে গেল সে।
নিট পরীক্ষায় (NEET Exam) দুর্দান্ত ফল বাংলার দীপজ্যোতির
সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় (NEET Exam) মোট ৭২০-র মধ্যে দীপজ্যোতির প্রাপ্ত নম্বর ৫১২। সর্বভারতীয় স্তরে তার ব়্যাঙ্ক ৩৯৪১৩ এবং রাজ্যের মধ্যে ৯১৪ নম্বর স্থানে জায়গা করে নিয়েছে সে। তার সাফল্যে খুশির আমেজ এলাকায়। সমস্ত প্রতিকূলতাকে পেরিয়ে যেভাবে সাফল্য ছিনিয়ে নিয়েছে দীপজ্যোতি, তাতে গর্বিত এলাকাবাসী। রবিবার সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে তাকে।
ছোট থেকেই মেধাবী ছিল দীপজ্যোতি: ছোট থেকেই অবশ্য পড়াশোনায় ভালো ছিল দীপজ্যোতি। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ব শান্তিনগর প্রাথমিক স্কুলে পড়ার পর ম্যাক উইলিয়াম হাইস্কুলে (NEET Exam) ভর্তি হয় সে। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর ভর্তি হওয়া বারোবিশার জওহর নবদয় বিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাশ। দুই পরীক্ষাতেই ৯০ শতাংশের উপরে নম্বর পেয়েছিল দীপজ্যোতি।
আরো পড়ুন : মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে যখন তখন ঘটতে পারে কেলেঙ্কারি! ‘সুইসাইড ডিজিজ’এ আক্রান্ত সলমন
বিনা চিকিৎসায় মারা যান বাবা: দীপজ্যোতির দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়েই ক্যানসার ধরা পড়ে তার বাবার। পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন তিনি। অর্থাভাবে ক্যানসারের চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। একরকম বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু হয় বাবার। সেই থেকেই চিকিৎসক হওয়ার জেদ দীপজ্যোতির আরো বেশি করে চেপে বসেছিল বলে জানান তার মা। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনিই হাল ধরেছিলেন সংসারের।
আরো পড়ুন : বাংলাদেশে ভাঙচুর রবিঠাকুরের কাছারিবাড়ি, ক্ষুব্ধ মমতাকে ‘প্রকৃত তথ্য’ জানাতে নবান্নে ওদেশের হাইকমিশনার
দীপজ্যোতির ছোট বোন পড়ে স্কুলে। সেলাই করে দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ তুলেছেন মা। দিনে ১৪ ঘন্টাই সেলাইয়ের কাজ করতে হয় তাঁকে। তবে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য পেয়েছিল দেবজ্যোতি। এক বছর পুণেতে থেকে নিট পরীক্ষার (NEET Exam) প্রস্তুতি নিয়েছে সে। এর জন্য কোনও অর্থ লাগেনি। ছেলে বড় চিকিৎসক হোক, এমনটাই চান মা। আর দীপজ্যোতির কথায়, ‘বাবার চিকিৎসা করাতে পারিনি টাকার অভাবে। তাই আরও বেশি করে চাইতাম ডাক্তার হতে’।