বাংলা হান্ট ডেস্ক : অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) নিয়ে কাজিয়া চলছেই। গোটা দেশ কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে এই বিষয়ে। একদল চাইতে আর অপেক্ষা নয়, এখুনি করতে হবে এক দেশ এক আইন লাগু। তাঁদের দাবি একই দেশে থেকে অন্য আইন মানা চলবে বা। অপর পক্ষের দাবি, ইউসিসি তাঁদের মৌলিক অধিকারে (Fundamental Rights) হস্তক্ষেপ করবে। অত:পর ইউসিসি (UCC) মানা যাবে না।
এই পরিস্থিতিতে পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র সরকার। ইউসিসি লাগু করতে রীতিমতো কোমর বেঁধে নেমেছে বিজেপি। গঠন করা হয়েছে ৪ মন্ত্রীর কমিটি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একাধিক জনসভায় সোচ্চার হয়েছেন ইউসিসি লাগুর পক্ষে। কিন্তু ভারতের মতো বিভিন্নতার দেশে এক দেশ এক আইন প্রতিষ্ঠা অতটাও সহজ হবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এক চাঞ্চল্যকর খবর। এক দেশ এক আইনের কট্টর বিরোধিতা করছে মুসলমান সমাজ। জানা যাচ্ছে, ইউসিসির বিরোধিতা করা সারা ভারত মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড গোটা দেশে যেখানেই মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে সেখানেই শরিয়া আদালত স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। প্রসঙ্গত, এই দেশে ১০০ টিরও বেশি শরিয়া আদালত রয়েছে।
ভারতীয় মুসলিম সমাজে সম্ভবত সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন এই ল বোর্ড। ভারতে দেশে মুসলিমদের ব্যক্তিগত আইনের (পার্সোনাল ল) ‘কাস্টডিয়ান’ বা হেফাজতকারী হিসেবেও তারা পরিচিত। সারা দেশে সব ধর্মের সব নাগরিকের জন্য একই ধরনের দেওয়ানি আইন – যেটাকে ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা ইউসিসি বলা হয়ে থাকে – তা চালু করার ব্যাপারে জনগণের মতামত জানতে চেয়ে ভারতের ‘ল কমিশন’ এর আগে ১৪ই জুন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল।
এর দিনকয়েক পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রকাশ্য জনসভা থেকে ইউসিসির জন্য সওয়াল করেন এবং বলেন, একই পরিবারের সদস্যদের জন্য যেমন আলাদা আলাদা নিয়ম হতে পারে না, তেমনি একই দেশের নাগরিকদের জন্যও আলাদা আইন থাকা উচিত নয়।
এরপর প্রস্তাবিত এই ইউসিসির নানা দিক খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন দলের এমপিদের নিয়ে একটি পার্লামেন্টারি প্যানেলও গঠন করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাতীয় সংসদের আসন্ন অধিবেশনেই ইউসিসি আনতে একটি বিল পেশ করা হবে।