বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শনিবার সকাল থেকেই সকলের নজর ছিল শিয়ালদা আদালতের দিকে। আরজিকর হাসপাতালের ডাক্তারি পড়ুয়া তরুণীর ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় রায় ঘোষণা হল আজ। শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস এই মামলায় সঞ্জয় রায়কেই মূল অভিযুক্ত হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। সোমবার তার সাজা ঘোষণা করা হবে।
CBI অফিসার সীমা পাহুজা (Seema Pahuja) কে?
আজ সকাল থেকেই সরগরম ছিল শিয়ালদা আদালত চত্বর। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়দানের দিনেও শনিবার আদালতে দেখা গেল না আরজিকার মামলায় সিবিআইয়ের প্রধান তদন্তকারী আধিকারিক সীমা পাহুজাকে (Seema Pahuja)। যা নিয়ে ইতিমধ্যে সিবিআই-এর অন্য আধিকারিকদের মধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও এই বিষয়ে সহকারীরা কোন মন্তব্য করতে চাননি। এমনকি সীমা দেবী কোথায় আছেন তাও কেউ জানেন না বলেই জানিয়েছেন। তবে এই হাইপ্রোফাইল সিবিআই আধিকারিকের আসল পরিচয় হয়তো জানেন না অনেকেই। আসুন জানা যাক তাঁর আসল পরিচয়।
কে এই সীমা পাহুজা?
হাথরস-কাণ্ডে সিবিআইয়ের ১৪ সদস্যের বিশেষ দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই CBI আধিকারিক সীমা পাহুজা (Seema Pahuja)। হিমাচল প্রদেশের গুড়িয়া মামলার তদন্তের দায়িত্বেও ছিলেন। সাহসের সাথে এবং নির্ভীকভাবে নিজের কর্তব্যে অবিচল থাকার কারণে অফিসার হিসেবে ২০১৪ সালের ১৫ অগস্ট পুলিশ মেডেলও পেয়েছিলেন সীমা। এই কারণেই হাই প্রোফাইল আরজি কর মামলার শুরু থেকেই তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল তাঁর কাঁধে।
আজ আরজি কর কাণ্ডের রায়দানের সময় আদালত চত্বরে সীমা পাহুজা (Seema Pahuja) অনুপস্থিত থাকায় অনেকেই গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বরের প্রসঙ্গ টেনে তুলনা করছেন। কি হয়েছিল ঐদিন? আরজিকর মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে এই ঘটনা তদন্তভার দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর হাতে। শিয়ালদা আদালত সঞ্জয়কে ১৪ দিনের জন্য জেলে হেফাজতে পাঠিয়েছিল সেই মেয়াদ শেষে গত 8 সেপ্টেম্বর সঞ্জয় রায়কে আদালতে হাজির করে কেন্দ্রে সংস্থার আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: বিরাট কড়াকড়ি! মাধ্যমিক নিয়ে এবার বড় নির্দেশ পর্ষদের
ঐদিন নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির হয়েছিলেন বিচারক। চলে আসেন অভিযুক্তের আইনজীবীও। কিন্তু তখনও এসে উপস্থিত হননি সিবিআই-এর আইনজীবী। তাকে দেখতে না পেয়ে স্বয়ং বিচারক খোঁজ নিতে শুরু করেছিলেন। ঐদিন সিবিআইয়ের তরফে যিনি আদালতে হাজির ছিলেন তিনি নিজেকে সহকারী তদন্তকারী আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তবে আদালতে সিবিআই এর পক্ষ থেকে তার কিছু বলার অনুমতি আছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন ধৃতের আইনজীবী। এরপর সিবিআইকে ভর্ৎসনা করে ক্ষুব্ধ বিচারক বলেছিলেন, ‘মামলার আইনজীবি শুনানিতে নেই। জামিন দিয়ে দেব?’
জানা গিয়েছিল ওই দিন ৪০ মিনিট পর বিচারকের এজলাসে এসেছিলেন সিবিআই-এর আইনজীবী। ওই ঘটনায় বিচারকের পাশাপাশি সিবিআই এর আইনজীবীর অনুপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন অন্যান্য আইনজীবীরাও। আর আজ সিবিআই-এর হাইপ্রোফাইল আধিকারিক সীমা পাহুজার (Seema Pahuja) অনুপস্থিতি নিয়েও সেই একই প্রশ্ন তুলছেন আইনজীবীদের একাংশ। যদিও সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে সীমা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় যুক্ত রয়েছেন। এছাড়া তথ্যপ্রমাণ লোপাটের মামলাও এখনও বাকি রয়েছে। তাই তার এই অনুপস্থিতিকে এত বড় করে দেখার কিছু নেই বলেই দাবি করা হচ্ছে।