বাংলা হান্ট ডেস্ক: ‘দেশ বাঁচাতে দমদমে চাই সুজন’! এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই প্রথম দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাইরে থেকে ভোটের লড়াইয়ে নেমে এমনই স্লোগান তুলেছেন সিপিএমের অন্যতম প্রধান সেনাপতি সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। বামদুর্গ ধসে যাওয়ার পর এই মুহূর্তে রাজ্যে সিপিএমের (CPM) অন্যতম বড় মুখ তিনি।
রাজ্য সম্পাদক মহাম্মদ সেলিমের পরেই দলের অন্যতম প্রধান সুজন চক্রবর্তী। দেখতে দেখতে করে ইতিমধ্যেই ৬৫টি বসন্ত বসন্ত পার করে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু এই বয়সে এসেও, এখনও আগের মতোই রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় রয়েছেন সুজন। তাই নিজের কেন্দ্রে প্রচারের পাশাপাশি দলের তরুণ তুর্কিদের জন্য জমি তৈরি করতেও ক্লান্ত হন না।
তিনি এবছর আলিমুদ্দিন স্ট্রিট তাঁকে আর যাদবপুর নয় দাঁড় করিয়েছে দমদম থেকে। যদিও অনেক আগে সেই ২০০৯ সালেই দমদম সিপিএমের হাতছাড়া হয়েছে। আর এই মুহূর্তে সিপিএমকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়ে এই নির্বাচনে জোড়া ফুলের প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে বিজেপি। তবে সুজন চক্রবর্তীর ঝুলিতেও রয়েছে বিধায়ক ও সংসদ হওয়ার পুরোনো অভিজ্ঞতা। তাই সেই অভিজ্ঞতার উপর ভর করেই এই মুহূর্তে বামেদের হারানো জমি ফেরানোর কঠিন লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি।
কিন্তু এসবের মধ্যেই সম্প্রতি ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে তিনি যে হলফনামা জমা দিয়েছেন তাতে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর (Mili Chakraborty) সম্পত্তির (Property) আকাশ-পাতাল পার্থক্য দেখে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। সকলেই জানতে চাইছেন সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর আয়ের উৎস। এমনকি প্রশ্ন উঠছে সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি নিয়েও। যদিও এসব নিয়ে একদণ্ড বিচলিত নন বর্ষীয়ান সিপিএম প্রার্থী সুজন । আসুন জানা যাক তাঁর যায় এবং সম্পত্তির পরিমাণ কত?
আরও পড়ুন: একি কাণ্ড! নতুন সেমিস্টার সিস্টেমের বই হাতে না আসায় পড়ুয়াদের PDF পড়ার পরামর্শ সংসদের
এদিনের হলফনামায় সুজন নিজের এবং স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর আয়ের যে খতিয়ান দিয়েছেন সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সুজনের আয় ছিল ১ লক্ষ ১৮ হাজার,আর তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩-এ তাঁর আয় ছিল ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এই বামনেতার আয় ছিল ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৪৪০ টাকা।অন্যদিকে সুজনের স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে আয় করেছেন ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৫০ টাকা,আর ২০২২-২৩ অৰ্থবর্ষে তাঁর আয় ছিল ২ লক্ষ ৭২ হাজার ৪১০ টাকা ও ২০২১-২২ এ তাঁর আয় ছিল ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৩০ টাকা। হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে সুজনের হাতে নগদ ৯ হাজার ৫০০ টাকা আর তার স্ত্রী মিলির হাতে রয়েছে নগদ ৬ হাজার ৬০০ টাকা।
এছাড়া সুজনের নামে যে দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার মধ্যে একটিতে রয়েছে ৪৪ হাজার টাকা ও অপরটিতে রয়েছে ১ লক্ষ ১০৩ টাকা। এছাড়া মিলির নামেও ব্যাংকে রয়েছে রয়েছে ৬টি অ্যাকাউন্ট। জানলে অবাক হবেন সুজনের স্ত্রীর কাছে আছে প্রায় ৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার সোনা। তবে সব মিলিয়ে সুজনের মোট অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৩ টাকা হলেও, তাঁর স্ত্রীর মোট অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৯২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৪৯ টাকার। তবে তাঁদের কোনও গাড়ি নেই। হলফনামায় সুজন নিজেকে সমাজকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন আর তাঁর স্ত্রী একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী।
তবে সোনারপুরে তাঁর যে জমি আছে তার বর্তমান মূল্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া কালিকাপুরে রয়েছে ১৬ লক্ষ টাকা মূল্যের জমির শেয়ার যার। বর্তমানে কালিকাপুরে সুজন চক্রবর্তী যে বাড়িতে বাস করেন তার বর্তমান মূল্য প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে সুজনের স্থাবর সম্পত্তির মূল্য প্রায় ২৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছা়ড়া স্ত্রীর ৩ লক্ষ ৫০ টাকার সম্পত্তি রয়েছে ।