মধ্যরাতে পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে তথ্য প্রমাণ লোপাটের প্রচেষ্টা, সঙ্গে আবার সেখানে বসেই চলছে মদের আসর! এহেন ভয়ঙ্কর অভিযোগ বর্তমানে উঠেছে নদীয়ার নাকাশিপাড়া তৃণমূল পরিচালিত বিলকুমারী পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছে আবার পঞ্চায়েত প্রধানেরই স্বামী। যদিও পরবর্তীকালে এলাকারই এক সাহসী ব্যক্তি পুরো ঘটনার ভিডিও করেন এবং এরপরই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এরপর বিজেপি কর্মীদের দ্বারা পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং প্রশাসনের কাছে অভিযোগও দায়ের করা হয় বলে খবর।
উল্লেখ্য, এলাকায় 100 দিনের কাজের প্রকল্পে এক পুকুর তৈরি করার কথা হয়েছিল। কিন্তু সেই পুকুর তৈরি করার নামে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পঞ্চায়েত কার্যালয় সহ গোটা এলাকা পরিদর্শন করার কথা ছিল আর সেই খবর সামনে আসতেই মঙ্গলবার মধ্যরাতে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঢুকে তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী সহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। এমনকী, ভিতরে বসে মদ খাওয়ারও অভিযোগ ওঠে।
সূত্রের খবর, এই ঘটনা ঘটাকালীন এলাকার এক ব্যক্তি পুরো ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং করেন এবং অভিযুক্তদের আটকানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় তাঁকে। এরপরই ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীরা এসে পৌঁছায় এবং বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা এসে কার্যালয়টিকে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বর্তমানে প্রশাসনের কাছে তারা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে বলে খবর। ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং করা ব্যক্তির সাহসিকতাকেও কুর্নিশ জানিয়েছে সকল গ্রামবাসী।
এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান অর্পিতা বর্মণ কোন মন্তব্য করতে চায়নি। তার স্বামী তথা মূল অভিযুক্ত প্রদ্যত বর্মণ বলে, “নির্মাণের কাজ চলছিল বলে ঠিকাদার আমাকে ফোন করে সেখানে ডাকে। তাই আমি গিয়েছিলাম, এর বেশি আর কিছু বলব না।”
গোটা ঘটনায় তৃণমূলকে আক্রমণ শানাতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “তৃণমূল দলের সংস্কৃতি হলো তোলাবাজি। বর্তমানে বাংলায় একাধিক তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত কার্যালয়ে মদের আসর বসানো হয়।” এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসক দলকে খোঁচা মেরে সিপিএম নেতা সুমিত দে বলেন, “তৃণমূলের এটাই আসল সংস্কৃতি। গোটা বাংলায় এখন দুষ্কৃতীদের সরকার চলছে আর তা আটকাতে তৃণমূল দল ক্রমশ ব্যর্থ হয়ে চলেছে।”