নামেই শৌচালয়, ভিতরে বিশ্রামাগার! কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই শোরগোল পুরুলিয়ায়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সরকারি টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়! ইতিপূর্বে সরকারি প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করার অভিযোগে রাজ্যের বিরুদ্ধে একাধিকবার সরাব হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি পুরুলিয়ার (Purulia) আরশা ব্লকের হেশলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঝুঁজকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যেতেই ধরা পড়েছে এমনই এক বিচিত্র ছবি। পুরুলিয়ার (Purulia) ওই শৌচালয়ের বাইরের দেওয়ালে লেখা রয়েছে পাবলিক টয়লেট। কিন্তু ভিতরে ঢুকতেই চক্ষু চড়ককাজ। শৌচালয় বদলে যাচ্ছে বিশ্রামাগারে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকায় তৈরি হওয়ার কথা ছিল শৌচালয়। হোয়েওছে, কিন্তু তা শুধুমাত্র নামেই শৌচালয়।

 পুরুলিয়ার (Purulia) শৌচালয় বদলে যাচ্ছে বিশ্রামাগারে

আসেল ভিতর থেকে বিশ্রামাগার। পুরুলিয়ার (Purulia) এই গ্রামের টয়লেটের ভিতর গিয়ে টয়লেট করতে না পারলেও দিব্যিবিশ্রাম করতে পারবেন গ্রামবাসীরা।  বাইরে পাবলিক টয়লেট লেখা এই শৌচাগারের ভিতরে গেলেই দেখা যাচ্ছে গ্রামবাসীদের জন্য বেঞ্চ পাতিয়ে তৈরি করা হয়েছে বসার জায়গা। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

বিরোধীদের অভিযোগ জনসাধারণের উপকারের জন্য আসা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা এইভাবে নয় ছয় করে দেওয়া হচ্ছে। যে জায়গাতে ওই বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে সেই জমির মালিক বুধন মাহাতো রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। তাঁর দাবি তৃণমূল নেতা মলয় কুমার তাঁর  কাছে বিশ্রামাগার তৈরির জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

তিনি মৌখিক অনুমতিও দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, বুধন মাহাতোর জমিতেই ওই পাবলিক টয়লেট তৈরির জন্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ধার্যও করা হয়েছিল। তবে তৃণমূল সমর্থক বুধন মাহাতোর দাবি, ‘আমার কাছে দলের নেতা মলয় কুমার এসেছিলেন। রেস্ট রুম করার জন্য জমি দিতে বলেছিলেন। আমি রাস্তার ধারে কিছুটা জমিতে রেস্ট রুম করার অনুমতি দিয়েছি।’

আরও পড়ুন: দোতালা বাড়ি থাকতে আবাসের টাকায় দুর্নীতি! এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

এই কেলেঙ্কারির কথা সামনে আসতেই ছেড়ে কথা বলেনি বিজেপি সমর্থকরাও। এপ্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙ্গা বলেছেন, ‘আমরা বারবার বলেছি সরকারের টাকা মানে সাধারণ মানুষের করের টাকা। কিন্তু রাজ্য সরকার, তৃণমূলের নেতা, চোর-আমলারা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নষ্ট করছে। এ কেমন টয়লেট যেখানে ভিতরে গেলেই বিশ্রামাগার। তার মানে সাধারণ মানুষের টাকা পুরোপুরি কাটমানি হিসাবে নিয়ে নওয়া হয়েছে। একইভাবে তৃণমূল নেতার বাড়িতেও টয়লেট বানানো হয়েছে।’

Purulia

তবে এই ঘটনায় আক্ষেপ করেছেন এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল নেতা দেবেন মাহাতো। তাঁর দাবি, ‘হেশলা গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাপক লুঠ চলছে। দলের নেতাদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সরকারি প্রকল্পে কাটমানি তুলছে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে পঞ্চায়েত সদস্যরা।’ তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবাঙ্গনা কুমার। তার পাল্টা দাবি, এলাকার মানুষই নাকি টয়লেট তৈরি করার সময় বাধা দিয়ে সেখানে একটা বিশ্রামাগার তৈরির কথা বলেছিলেন।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর