বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ (Teacher Recruitment) নিয়ে বিরাট রায় দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বাম আমলে প্রাথমিকের (Primary) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রায় ৪০০ জনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। বেঁধে দেওয়া হল টাইট ডেডলাইন।
গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি চলছিল। সেখানেই বিচারপতির বিরাট নির্দেশ, চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে যত মামলা দায়ের হয়েছে, সকলকে চাকরি দিতে হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে যোগ্যতার ভিত্তিতে সকল মামলাকারীদের চাকরি দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের।
প্রসঙ্গত, সময়টা ২০০৯ সাল। সেই সময় প্রাথমিকে ১,৮২৬ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় তৎকালীন বাম সরকার। পরের বছর শুরু হয় নিয়োগ প্রক্রিয়া। তবে ২০১১ সালে পালাবদলের পর বাম আমলের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় তৃণমূল সরকার। পাশাপাশি নতুন প্যানেল প্রকাশ করে মমতা সরকার। ওই প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। পরে সেই জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টেও।
সুপ্রিম কোর্ট নয়া তৃণমূল সরকারের পক্ষে রায় দিলেও জানায়, বাম আমলে চাকরিতে আবেদনকারীদেরও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দিতে হবে। ওই প্যানেলের ক্ষেত্রে নতুন করে কোনো আবেদন নেওয়া যাবে না। এরপর আদালতের নির্দেশ মেনে ২০১৪ সালে ওই প্যানেলেই ফের নিয়োগ শুরু করে তৃণমূল সরকার। তবে এখানেও জট কাটেনি। ২০১৫ সালে বাম আমলের নিয়োগ সংক্রান্ত প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর গোপালচন্দ্র কাঞ্জি-সহ বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী নিয়োগে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফের মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ৪০ কিমি বেগে ঝড়! হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হবে দক্ষিণবঙ্গ সহ কলকাতায়, আবহাওয়ার চরম টুইস্ট
তাদের অভিযোগ ছিল, শিক্ষক হওয়ার নূন্যতম যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নতুন আবেদনকারীকে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই চাকরি পেয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ত্রুটি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সিবিআই তদন্তেরও দাবি তোলা হয়। এরপর এই একই অভিযোগ তুলে একাধিক মামলা করে চাকরিপ্রার্থীরা। একের পর এক মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। এতদিন ধরে ঝুলেছিল এই চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ ।
২০২৩ সালে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদের মধ্যে কিছু জনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন। আর এবার প্রায় ৪০০ জনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি মান্থা। হাওড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শককে চাকরি দেওয়ার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।