বাংলাহান্ট ডেস্ক : চলছে অম্বুবাচী উৎসব। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, আষাঢ় মাসের মৃগশিরা নক্ষত্রের তৃতীয় পদ শেষ হলে ধরিত্রীমাতা ঋতুমতী হয়ে ওঠেন। আর সেই কারণেই সম্পূর্ণভাবেই বন্ধ রাখা হয় কৃষিকাজ। এমন কি কোন শুভ কাজেও হাত দেওয়া হয় না।গৃহপ্রবেশ, বিবাহের মতো প্রায় সব মাঙ্গলিক কাজকেই নিষিদ্ধ হিসেবে মেনে নেওয়া হয়। এই তিন দিন বন্ধ রাখা হয় অসমের দেবী কামাখ্যার মন্দির। কোন ভক্তেরই প্রবেশ করার অধিকার থাকে না।
শাস্ত্রমতে, প্রতিটি পুজোর রীতিনীতির মত অম্বুবাচী পালনের ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। এই সব নিয়ম বাড়ি বা মঠ-মন্দির উভয়ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আর এই রীতিগুলি বছরের পর বছর ধরে পালনও করা হচ্ছে।
১) অম্বুবাচী উৎসব চলাকালীন সময়ে মাটিতে খনন কার্যকে নিষিদ্ধ হিসেবেই ধরা হয়। এমনকি, এই সময়ে বীজ বপণ বা বৃক্ষরোপণ করারও নিয়ম নেই। কৃষিকাজের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুধু তাই নয়, এ সময়ে হাল ধরাকেও শাস্ত্র মতে সঠিক নয় বলেই উল্লেখ করা হয়।
২) অম্বুবাচী তিন দিন বাড়িতে কোন শুভ কাজ একেবারেই করা যায় না। এই সময় গৃহপ্রবেশ বিবাহের মত যেগুলো মঙ্গল উৎসব শ্রীমঙ্গল উৎসবের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকে।
৩) এই সময় সাধারণত বিভিন্ন মঠ এবং মন্দিরের প্রবেশদ্বার দর্শনার্থীদের জন্য খোলা রাখা হয়না। দেবীমূর্তির পিঠস্থান গুলিতে দেবীর মূর্তিকে লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখার কথাই শাস্ত্রে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয় যে সকল বাড়িতে, প্রতিদিন মা কালী, দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, বিপত্তারিণী, শীতলা, চণ্ডীর পুজো হয় , তারাও দেবীর মূর্তিকে উন্মুক্ত রাখতে পারেন না।
৪) অম্বুবাচী সময় বাড়িতে পূজার্চনা করার নিয়ম নেই। অবশ্য কোনো গৃহস্থ চাইলে মন্ত্র উচ্চারণ ছাড়া ধূপ ধুনো জ্বালিয়ে আরাধনা করতেই পারেন। এর পাশাপাশি, কেউ গুরুমন্ত্রে দীক্ষিত হলে তিনি জপে মনোনিবেশ করতেই পারেন। তবে, এই তিনদিন শাঁখ বাজানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
৫) অম্বুবাচীর তিনদিন ব্রহ্মচর্য অনুসরণ করার বিধানও কেউ কেউ দেন। নতুন বস্ত্র পরিধান করাও ঠিক নয়। নদীতে স্নান করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়াও, নখ কিংবা চুল না কাটার নিয়মও রয়েছে।