বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমেরিকার (America) ব্যাঙ্কিং সেক্টরে এবার ফের আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মূলত, ১৫ বছর পর আরও একবার ব্যাঙ্কিং সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে আমেরিকা। ইতিমধ্যেই আর্থিক সঙ্কটের (Financial Crisis) জেরে ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যাঙ্কিং রেগুলেটার্স সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের (Silicon Valley Bank) ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যাঙ্কটির ডিপোজিট অর্থেরও নিয়ন্ত্রণ গিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হাতেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মোট সম্পদের বিচারে সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক আমেরিকার ১৬ তম বৃহত্তম ব্যাঙ্ক হিসেবে বিবেচিত হত। এদিকে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ওঠে আসছে। এই ব্যাঙ্কের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পেছনে ঠিক কি কারণ রয়েছে এবং এর ফলে ভারতীয় বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে কি না এই বিষয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন সকলে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্ৰতিবেদনে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
জানা গিয়েছে, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই এই ব্যাঙ্ক নগদের সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছিল। এই ব্যাঙ্কটি মূলত বিভিন্ন স্টার্টআপ এবং টেক কোম্পানিগুলিকে ঋণ দিত। আমেরিকান সংবাদমাধ্যমগুলি দাবি করেছে যে, সুদ বৃদ্ধির কারণেই এই ব্যাঙ্কের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এদিকে, কিছুদিন আগেই এই ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের টাকা না তোলার জন্য আর্জি জানায়। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্ক বন্ধ হওয়ার ঠিক ২৪ ঘন্টা আগে সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের CEO জানিয়ে দেন যে গ্রাহকদের অর্থ সুরক্ষিত আছে। এদিকে, সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত হয়ে পড়েন গ্রাহকেরা।
এমতাবস্থায় ব্যাঙ্কিং রেগুলেটার্স, ফেডেরাল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন (FDIC) আপাতত ব্যাঙ্কের পুরো বিষয়টিতে নজর রাখবে। জানা গিয়েছে, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের মোট ১৪ হাজার কোটি টাকা জমা আছে। এই অর্থের সুরক্ষার দায়িত্ব রয়েছে FDIC-র কাছে। এদিকে, FDIC জানিয়েছে যে, ওই ব্যাঙ্কের মোট সম্পত্তির পরিমান হল ১৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়াও, FDIC এই বিপুল সম্পত্তি ও অর্থের সঠিক লেনদেন এবং ডিপোজিটের জন্য “ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অফ সন্তাক্লরা”-নামের একটি ব্যাঙ্ক চালু করেছে। যেটি গত ১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে।
ভারতে কি প্রভাব পড়বে: প্রথমেই আমরা জানিয়েছি যে, এই ব্যাঙ্ক বিভিন্ন স্টার্টআপকে ফান্ড দিত। স্বাভাবিকভাবেই, এর প্রভাব ভারতীয় স্টার্টআপের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক ভারতের প্রায় ২১ টি স্টার্টআপে বিনিয়োগ করেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে Icertis-এ। এছাড়াও, এই ব্যাঙ্ক Bluestone, Paytm, One97 Communication, Paytm Mall, Naaptol, Carwale-র মত সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ করেছে।
তবে, Paytm-এর CEO বিজয় শেখর শর্মা জানিয়েছেন যে, এই ব্যাঙ্কের বিনিয়োগের শেয়ার আগেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। তাই, তারা প্রভাবিত না হলেও বাকিদের ওপর এই চাপ পড়তেই পারে। এমতাবস্থায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন যে, তিনি এই স্টার্টআপগুলির সাথে আলোচনা করবেন এবং সরকারের কাছে সাহায্যের জন্য আর্জিও জানাবেন।