বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ফের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড়সড় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে ভারত (India)। মূলত, নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং ভারত মহাসাগর বরাবর শত্রুর উপর কড়া নজর রাখার কাজ এবার আরও সহজ হতে চলেছে। আমেরিকার (America) কাছ থেকে পেতে চলা MQ-9B Predator Armed Drone এই সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে শত্রুদের যেকোনো চালাকি ধরে ফেলতে পারবে। শুধু তাই নয়, এই ড্রোন অন্যান্য বিমানের চেয়ে বেশিক্ষণ উড়তে পারে এবং দীর্ঘক্ষণ বাতাসে ভেসে থেকে দিন এবং রাত উভয়ক্ষেত্রেই ফুল মোশন ভিডিও সরবরাহ করতে পারে। এমতাবস্থায়, এটির সাহায্যে ভারত এখন শত্রুর প্রতিটি গতিবিধির ওপর নজর রাখতে পারবে।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে হতে চলা এই চুক্তির খরচ ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে। এই চুক্তির অধীনে ভারত ৩০ টি MQ-9B Predator Armed Drone পাবে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই বিষয়ে গত ৫ বছর ধরে কাজ চলছে এবং এখন ভারতকেই এই চুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এমতাবস্থায়, ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার প্রয়োজনে এই ড্রোন সিস্টেমকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তথ্য অনুযায়ী, চুক্তি হওয়ার পর তিনটি সেনাবাহিনীকে ১০ টি করে ড্রোন দেওয়া হবে। উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে এই চুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
ভারত কেন চায় চুক্তিটি দ্রুত সম্পন্ন হোক: মূলত, ভারত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে চায়। কারণ এই ড্রোন সিস্টেমের সাহায্যে ভারত কেবল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাই (LAC) নয়, পাশাপাশি, ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তার স্তরেও নজরদারি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হবে। জানা গিয়েছে যে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত ডোভাল এই চুক্তির বিষয়ে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সহ একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের আধিকারিকদের সাথে আলোচনা করেছেন। ওই বৈঠকেও এই চুক্তির দ্রুত সম্পন্ন হওয়ার প্রসঙ্গে সম্মতি মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।
এই চুক্তিতে আমেরিকার কি লাভ হবে: ভারতের পাশাপাশি আমেরিকাও এই চুক্তিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পন্ন করতে চায়। কারণ আগামী বছর আমেরিকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হতে চলেছে। এমতাবস্থায়, এই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। যার ফলে রাজনৈতিকভাবেও লাভ মিলবে।
এই ড্রোন সিস্টেমের বিশেষত্ব: MQ-9B ড্রোন ওই বিভাগের অন্য যেকোনো বিমানের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। যেটি দীর্ঘক্ষণ ধরে উড়তে সক্ষম। যার ফলে ভারতের নজরদারি আরও শক্তিশালী হবে। এছাড়াও, দিন হোক বা রাত, এই ড্রোন “ফুল-মোশন” ভিডিও সরবরাহ করতে সক্ষম। পাশাপাশি, এই ড্রোনটি অনবোর্ড সিস্টেমের সাথে আরও বিভিন্ন ধরণের তথ্য দেয়। সর্বোপরি, এটি একটি মাল্টিপারপাস ড্রোন সিস্টেম যা দূরে বসেও চালানো যায়। জাপান, বেলজিয়াম, ব্রিটেন সহ একাধিক বড় দেশ ইতিমধ্যেই এই ড্রোন সিস্টেম ব্যবহার করছে।