ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আসছে চিনের “যম”! ড্রাগনকে শিক্ষা দিতে বিরাট পদক্ষেপ আমেরিকার

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের (China) সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আমেরিকা (America) একটি বড় পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে আগামী এক দশকে ওই এলাকায় ৩০০ টিরও বেশি উন্নত F-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে, আমেরিকা এই সমস্ত বিমান মোতায়েন করবেনা। বরং তারা সেগুলি এই অঞ্চলে তাদের মিত্রদের কাছে হস্তান্তর করতে চলেছে। এই তালিকায় আমেরিকা ছাড়াও রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুর। উল্লেখ্য যে, চিনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে F-35 যুদ্ধবিমানের চাহিদা দ্রুত বেড়েছে।

মার্কিন বিদেশ দপ্তর লকহিড মার্টিনের কাছে ২০২০ সালে সিঙ্গাপুরে ১২ টি F-35B শর্ট টেক অফ এবং ভার্টিক্যাল ল্যান্ডিংযুক্ত বিমান বিক্রির ক্ষেত্রে অনুমোদন দিয়েছিল। আমেরিকান কোম্পানি লকহিড মার্টিন এই বিমান তৈরি করে। এই বিমানগুলির মধ্যে প্রথম চারটি ২০২৬ সালের মধ্যে সরবরাহ করা হবে। এদিকে, সিঙ্গাপুর তার বিমান বাহিনীর বহরে পরবর্তী প্রজন্মের বিমান যুক্ত করছে। যার জন্য F-35 অধিগ্রহণ করতে হবে। সিঙ্গাপুরে বর্তমানে F-16 যুদ্ধবিমান রয়েছে। যেগুলি ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বিমানের মেরামত ও ওভারহলের ব্যবস্থা: লকহিডের একটি অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ২০৩৫ সালের মধ্যে ৩০০ টিরও বেশি F-35 বিমান ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে থাকবে। এইসব বিমানের সুষ্ঠু সরবরাহের পাশাপাশি দক্ষতা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতেরও পরিকল্পনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানির তিনটি ফাইনাল অ্যাসেম্বলি এবং চেক আউট সুবিধার মধ্যে একটি জাপানের নাগোয়ায় স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও, উত্তর এশিয়ার আঞ্চলিক রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, ওভারহল এবং আপগ্রেড সেন্টারও নাগোয়াতে অবস্থিত। যেটি ২০২০ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। জাপান এয়ার সেলফ ডিফেন্স ফোর্স ও ইউএস এয়ারফোর্সের বিমানকে পরিষেবা প্রদান করা হবে। সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের প্ল্যাটফর্মগুলি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সম্পর্কের লক্ষ্যকে সমর্থন করে চলেছে।”

America's big step to stop China.

কেন F-35 ইন্দো-প্যাসিফিকের পছন্দ: ইউরেশিয়ান টাইমস লকহিড মার্টিনের F-35 আন্তর্জাতিক ব্যবসার পরিচালক স্টিভ ওভারকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে আজকের বিশ্বে কেউ একা যুদ্ধে যাচ্ছে না। তাই এটি জোটের সক্ষমতা তৈরির বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়। F-35-এর বিশেষত্ব হল এই যুদ্ধবিমান শুধু আমেরিকার কাছেই নয়, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলির পাশাপাশি ইউরোপিয় দেশগুলির কাছেও রয়েছে।

আরও পড়ুন: ভারতে ঘুরে দাঁড়াতে টাটার পায়ে পড়ছে চিন! ফাঁস হল বেজিংয়ের প্ল্যান

এই কারণে, F-35 ভবিষ্যতের সংঘর্ষে একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা পেতে চলেছে। মূলত, ভবিষ্যত বিশ্বে একাধিক দেশের জোটের ক্ষেত্রে সেনার লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে ডেটা পেতে পাইলটদের যেকোনও F-35 নেটওয়ার্কে প্লাগ করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এটিকে একটি আমেরিকান জাহাজ বা কোনো নির্দিষ্ট দেশের একটি জাহাজ হতে হবে না। এই হ্যান্ডলিং গুণটি সমস্ত গ্রাহকদের জন্য F-35 এর বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠছে। এই কারণেই F-35 ইন্দো-প্যাসিফিকের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করে।

আরও পড়ুন: ঝড় তুলবে সবুজ-মেরুন! মুম্বাইয়ের কাছ থেকে মেলবোর্ন সিটির তারকাকে ছিনিয়ে নিল মোহনবাগান

চিনকে মোকাবিলা করার পরিকল্পনা: এগুলি ছাড়াও চিনও একটি বড় বিষয়, যার কারণে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার বিমান শক্তি বাড়াতে আমেরিকার চাপ রয়েছে। উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চিন তার বিমান বাহিনীতে বিভিন্ন অত্যাধুনিক বিমান অন্তর্ভুক্ত করেছে। জল্পনা রয়েছে যে চিন শীঘ্রই বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহিনী তৈরি করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিন প্রতি বছর প্রায় ১০০ টি J-20 যুদ্ধবিমান তৈরি করছে, অন্যদিকে লকহিড মার্টিন বছরে ১৩৫ টি F-35 তৈরি করছে। তবে চিনের বেশিরভাগ J-20 নিজস্ব ব্যবহারের জন্য। যেখানে, আমেরিকায় তৈরি F-35 বিমানের ৬০ থেকে ৭০ টি বিমান মিত্রদের কাছে রপ্তানি করা হয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর