বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতির জেরে ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। গত ৩ এপ্রিল এই রায় দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার (Justice Sanjiv Khanna) বেঞ্চ। সম্প্রতি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদন মেনে ‘দাগি’ অথবা ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত নন এমন শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এরপরেই সামনে আসছে বড় খবর। বিরাট সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
২৬,০০০ চাকরি বাতিলের (SSC Recruitment Scam) আবহে কী সিদ্ধান্ত নিল সরকার?
একধাক্কায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়ার পর থেকেই শিরোনামে রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কয়েকদিন আগেই আচার্য সদনের বাইরে অবস্থানে বসেছিলেন চাকরিহারারা। প্রায় দু’দিন ‘অফিস-বন্দি’ ছিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান। চাকরি বাতিলের এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে এসএসসির দীর্ঘদিনের শূন্যপদ পূরণ করল সরকার। কমিশনের নতুন সচিব পদে নিয়োগ করা হল অরুণ কুমার রায়কে।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে এই বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানেই একথা জানানো হয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, এর আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিব পদে ছিলেন অর্ণব চট্টোপাধ্যায়। তিনি ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে এই পদটি ফাঁকা ছিল। অবশেষে এসএসসির (School Service Commission) সচিব পদে নিয়োগ করল সরকার। সুপ্রিম-নির্দেশ অনুযায়ী নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আগেই অরুণ কুমার রায়কে এই দায়িত্ব দেওয়া হল।
আরও পড়ুনঃ দেশ বাঁচাতে প্রাণ দিয়েছেন ঝন্টু আলি শেখ! ভাইয়ের আত্মত্যাগে গর্বিত সেনাবাহিনীতে কর্মরত দাদা
এদিকে সরকারের (Government of West Bengal) এই পদক্ষেপ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিজন সরকার বলেন, ‘যে কোনও শূন্যপদ পূরণ রাজ্যের দায়িত্ব। এই মুহূর্তে স্কুল সার্ভিস কমিশনে যে পরিমাণ কাজের চাপ, তাতে পূর্ণ সময়ের সচিব দরকার ছিল। এর ফলে আরও ভালোভাবে কাজ এগোবে। আদালতে মামলার কাজ ও নতুন নিয়োগ বিষয়ক কাজের চাপ সামলানোর জন্য নতুন সচিবের দরকার রয়েছে। শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত’।
অন্যদিকে এসএসসি (SSC) সচিবের শূন্যপদ পূরণ করে আদৌ কোনও লাভ হবে কিনা এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আরেকটি মহল। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে নবান্ন থেকে এসএসসিতে একজন নতুন সচিব পাঠানো হল। তবে এর ফলে কি কোনও লাভ হবে? কারণ সরকারের মজ্জায় দুর্নীতি আছে। এর মাথা যদি ঠিক না হয়, তাহলে সচিব বদল করে কোনও লাভ হবে বলে আমার মনে হয় না’।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আবেদন জানানো হয়, যে সকল শিক্ষকরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত নন, তাঁদের স্কুলে যেতে দেওয়া হোক। সেই আবেদন মেনে নিয়েছে শীর্ষ আদালত। জানানো হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর অবধি এই শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে যেতে পারবেন। সেই সঙ্গেই ২০২৫ সালের মধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩১ মে-র মধ্যে জারি করতে হবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি। তার আগেই দীর্ঘদিন ধরে খালি থাকা এসএসসির শূন্যপদ পূরণে উদ্যোগী হল সরকার। বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হল সেকথা।