বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে আবাস দুর্নীতি (Awas Corruption) ইস্যুতে ঢেকে গেছে বঙ্গের মাটি। কোথাও দেখা গেছে পেল্লায় ইমারত থাকা সত্ত্বেও তালিকায় নাম উঠেছে বিত্তবানদের, আবার কোথাও শাসকদলের ঘনিষ্টদের নামের ভিড়ে জায়গায়ই করতে পারেনি হত দরিদ্র মানুষেরা। এবার ঠিক এমনই এক ঘটনা উঠে এল বসিরহাটের (Barirhat) হিঙ্গলগঞ্জ থেকে। ভাঙা মাটির ঘরে বাস তাঁর তবু মেলেনি যোজনায় ঘর। হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েতের হেমনগরের বাসিন্দা ঊর্মিলা মণ্ডলের দাবি, শাসকদল তৃণমূলের (Trinamool Congress) অনুগত তিঁনি। কিন্তু বিজেপি করার অভিযোগ তুলে তাঁর নাম কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে তালিকা থেকে।
অমানবিক এই ঘটনাটি ঘিরে শোরগোল হেমনগরে সুন্দরবন-লাগোয়া এলাকায়। প্লাস্টিক ছাওয়া মাটির ঘরে কোনোক্রমে দিনযাপন ৬৫ বছরের বৃদ্ধার। তবুও সরকার তরফে যোজনার ঘর দেওয়া হয়নি তাঁকে। এবিষয়ে বৃদ্ধা জানান, প্রথম দফায় আবাস যোজনার ঘরের তালিকায় নাম ছিল। কিন্তু পরে তা কেটে বাদ দেওয়া হয়। এরপরেই ঘটনার অভিযোগ তুলে বিডিওর দ্বারস্থ হন বৃদ্ধা। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমি নাকি বিজেপি করি। তাই নাম কাটা গিয়েছে। কিন্তু আমি তৃণমূল করি। তৃণমূলের মিটিং-মিছিলে যাই। অথচ, বলা হচ্ছে আমি বিজেপি করি। সে কারণে ঘর পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হলাম।’’ বৃদ্ধার সংযোজন, ‘‘ওরা ভুলে গিয়েছে, আমরাই লড়াই করে তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছিলাম।’’
এবিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল জানান, ‘‘কিছু গরিব মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। আমরা চাই, কোনও দল না দেখে প্রকৃত গরিব মানুষ ঘর পান।’’ পাশাপাশি এ ঘটনা প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান নগেন বৈদ্য বলেন, ‘‘এখানে দলের কোনও ব্যাপার নেই। হেমনগর মৌজায় ঘরের উপভোক্তা ছিলেন ৩১৩ জন। সমীক্ষায় ঊর্মিলা-সহ কয়েকজনের নাম বাদ গিয়েছে। যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁরা যাতে ঘর পান, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে জানানো হয়েছে।’’
তবে এই ঘটনা নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি বাহিনী। এবিষয়ে দলের বসিরহাট জেলার কার্যকারী সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘শাসকদলের নেতাদের টাকা দিতে না পারলে ঘর মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে অনেক সময়ে নিজের দলের লোককেও বঞ্চিত করতে দ্বিধা করছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। হেমনগরের ঘটনা তারই একটা বড় উদাহরণ।’’