বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার রাজ্যে সন্ধান মিলল এক প্রাচীন গুহার (Cave)। মূলত, বাঁকুড়ার (Bankura) জঙ্গলেই খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ওই গুহাটির। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই সুপ্রাচীন গুহাটির প্রসঙ্গ সামনে আসতেই এটির আকার-আয়তন দেখে সেটিকে “আদিম মানুষের বাসস্থান” হিসেবে মনে করছেন অনেকে। সর্বোপরি, বাঁকুড়ার পাহাড়ে প্রায় ২০০ ফুট দীর্ঘ এই গুহার সন্ধান মেলায় অবাক হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
মূলত, সোমবার বাঁকুড়ার রানিবাঁধ (Ranibadh) এলাকার গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লকে অবস্থিত পোড়া পাহাড়ের মাঝে এই গুহাটিকে দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এর আগেও বাঁকুড়া জেলায় কখনও গন্ধেশ্বরী নদীর কাছে আবার কখনও মোশক পাহাড়ের নিকটে গুহার সন্ধান মিলেছে। তবে, এই গুহা বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করছে সবাইকেই। গুহাটি কিছু দূর গিয়ে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, দু’টি দিক মিলে সেখানে মোট ৭ টি কুঠুরি পাওয়া গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
তবে, ওই গুহাটিতে সত্যিই আদিম মানুষ বসবাস করত কি না, সেই বিষয়ে এখনই কিছু নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ওই গুহাটির মুখ রয়েছে পাহাড়টির উত্তর দিকে। পাশাপাশি, সেটির উচ্চতা হল ৬ ফুট এবং চওড়া হল ৪ থেকে ৫ ফুট। গুহাটি গঠনগত দিক থেকে কিছুদূর বিস্তৃত হওয়ার পরেই দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে ডানদিকে সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য হল প্রায় ৬০ ফুট। পাশাপাশি, বাঁদিকের অংশটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ ফুট। সর্বোপরি, সুড়ঙ্গের ওই অংশেই দু’দিকে মোট সাতটি কুঠুরি রয়েছে।
এদিকে, এই গুহাটির প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে ওই পাহাড়ে একটি সংস্থা ইউরেনিয়াম সংগ্রহের কাজ শুরু করে। যদিও, মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় সেই কাজ। তারপর থেকেই ওই জায়গাটি গুহার আকার নিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, ব্রিটিশ আমলে খনিজ পদার্থ উলফ্রামের খোঁজে এই গুহা খনন করা হয়ে থাকতে পারে। তবে গুহাটি যে আমলেই খনন করা হয়ে থাকুক না কেন আপাতত সেটিকে সংরক্ষণের দাবি তুলছেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও, রানিবাঁধের বিধায়ক তথা মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি জানিয়েছেন যে, ”আমি বছর দুয়েক আগেই ওই পাহাড়ের উপর উঠে গুহাটি দেখে এসেছি। ওই গুহায় এখন শিয়াল ছাড়াও একাধিক বন্যপ্রাণী আশ্রয় নিয়েছে।” তবে, এই গুহার সন্ধান মিলতেই খবর পাঠানো হয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অফিসে। পাশাপাশি, জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর মিলেছে যে, ওই এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।