রুপোলী পর্দার গল্প ঘটল বাস্তবে, অদম্য ইচ্ছা শক্তির জোরে PhD পাশ করলেন এক অটোচালক যুবক

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ অটো (Auto) চালিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করলেন ২৮ বছর বয়সী এক যুবক। সাংসারিক সমস্যার কারণে দশম শ্রেণী থেকেই পড়াশুনা বাদ দিয়ে সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন এই যুবক। তারপর ধীরে ধীরে আবার নতুন করে পড়াশুনা শুরু করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করলেন তিনি। অর্জন করলেন PhD ডিগ্রি এবং বর্তমানে তিনি শ্রী সি অচুতা মেনন গভর্নমেন্ট কলেজে শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত রয়েছেন।

এই যুবক জানান, ‘আমি বারবার বিভিন্ন কাজে অসফল হয়েছি। কিন্তু কখনোই কোন কিছুতে হেরে যাইনি। জীবনটাই ছিল হেরে যাওয়ার এক গল্প। আমি কথাই বিশ্বাস করি, স্বপ্ন অপরিসীম। মানুষ শুধু নিজের চারপাশে এক গণ্ডি তৈরি করে রেখে দেয়’।

এই যাত্রা পথ একদমই সহজ ছিল না তাঁর জন্য। মাত্র তিন মাস বয়সেই তাঁকে এবং তাঁর মাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যান তাঁর বাবা। তখন সহায় সম্বলহীন তাঁর মা তাঁকে নিয়ে এক প্রত্যন্ত গ্রামে চলে যান, যেখানে বিদ্যুৎ অবধি পৌঁছায়নি। তাঁর মা অনেক কষ্টে কাজ করে সংসার চালিয়ে তাঁকে স্কুলে ভর্তি করেন। দশম শ্রেণীতে অংক পরীক্ষায় পাশ না করতে পারায় তারা মা জানাতে চান, এখন সে কি করতে চায়? উত্তরে তিনি জানান, পড়াশুনা আর নয়, এবার কাজ করতে চান তিনি।

সেইমত তিনি কাজে নিযুক্ত হয়ে  প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে উপার্জন করতে শুরু করেন। তবে প্রাকৃতিক সমস্যা জনিত কারণে বর্ষা কালে তিনি মাঠে চাষ করা, মাছ বিক্রি করার কাজে নিযুক্ত হন। কিন্তু কাজের জায়গায় তাঁকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করতে থাকে, পড়াশুনা কেন ছাড়লেন তিনি? লোকমুখে বারবার পড়াশুনার কথা শুনে তিনি ঠিক করলেন নতুন করে আবার পড়াশুনা শুরু করবেন। তারপর ২০০৭ সালে তিনি আবার স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর, সেখান থেকে পাশ করে সেন্ট পিটার্স কলেজে ভর্তি হন। তখন তিনি সামান্য টাকা জমিয়ে একটি অটো কিনে নেন। পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে সন্ধ্যায় তিনি অটো চালাতে শুরু করেন।

এইভাবে ধীরে ধীরে তিনি স্বপ্নপূরণের দিকে কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়। কলেজ পাশ করে B.ed পাশ করেন। তারপর কলেজের শিক্ষক পদে নিযুক্ত হওয়ার জন্য পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রী করতে মালায়লাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন। পরবর্তী ৩ বছর পর সাফল্য তাঁর দরজার এসে কড়া নাড়ে। অদম্য মনোবল এবং প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে PhD ডিগ্রি অর্জন করে নেন তিনি।

X