বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দেশজুড়ে মারণ ভাইরাসের (Corona) দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতি। দিনে দিনে রেকর্ড হারে মানুষজন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। থেমে নেই মৃতের সংখ্যাও। তবে এমন ভয়ঙ্কর ভাবে সংক্রমণের ঊর্ধগতিতে লাগাম টানতে বাঁধ সেধেছে বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। দেশের সর্বত্র অক্সিজেনের আকাল এবং হাসপাতালে শয্যার অভাব। যার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন একাধিক মহল।
ঠিক এমনই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে নিজের আওতায় থাকা জেলাকে করোনা মোকাবিলায় আত্মনির্ভরশীল করে তুললেন মহারাষ্ট্রের (Maharastra) আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা নন্দুরবারকে (Nandurbar)। সেখানেই এখন একাধিক রাজ্যের করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিজনরা চিকৎসার জন্য আসছেন। দেশ যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে উঠেছে, তখন একাধিক প্রশাসনের তরফে গা ছাড়া মনোভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল।
ঠিক সেই সময়, একটু সময় নষ্ট না কর জেলাশাসক চিকিৎসক রাজেন্দ্র ভারুদ (Rajendra Bharud) সেই জেলায় বসিয়েছেন দুটি অক্সিজেন প্লান্ট, স্কুল এবং কমিউনিটি হল গুলোকে বানিয়েছেন করোনা সেন্টার। সেখানে ৭০০০ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন। যার মধ্যে রয়েছে ১৭০০ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউ-ও। সঙ্গে কিনেছেন ২৭টি অ্যাম্বুলেন্স। যার মধ্যে দুটি করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ বহনের জন্য। জানা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই সেখানে তৃতীয় অক্সিজেন প্লান্টটিও চালু হবে সেখানে। ফলস্বরূপ যেখানে মহারাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি দেশের মধ্যে সবথেকে উদ্বেগজনক, সেখানে এই অধিবাসী অধ্যুষিত জেলার উপরই করোনা চিকিৎসায় নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে, সে রাজ্য তো বটেই, সঙ্গে প্রতিবেশী রাজ্যগুলিও।
এমনকি ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে রেমডিসিভির ওষুধ মজুত করে রেখেছেন তিনি। রোগীদের সামান্য শ্বাসকষ্ট হলেই দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন। জেলার এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে প্রতিদিন ১৬টি গাড়িতে করে করোনা টিকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। ফলস্বরূপ সেখানে রোজকার করোনা সংক্রমণ ১২০০ থেকে ৩০০-তে নেমে এসেছে। স্বেচ্ছাসেবক, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সরকারি অধিকারিকদের সঙ্গে মিলে তিনি এই কাজ করেছেন বলে জানান।
করোনা অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াই গোটা দেশ যখন জেরবার, তখন এই আদিবাসী অধ্যুষিত জেলার সংক্রমণ মোকাবিলার রূপরেখা দেখে আইএএস রেজন্দ্রকে (IAS Rajendra Bharud) সাধুবাদ জানাচ্ছেন সকলেই। জানিয়ে দি, এই রাজেন্দ্র ছিলেন হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। মায়ের একাই তিনি। আইএএস হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি মায়ের সাথে কাটিয়েছেন ছোট্ট কুটিরেই। আজ তাঁকে ঘিরেই প্রশংসার বন্যা সর্বত্র।