দেশ জুড়ে নাগরিকতা আইন আর NRC নিয়ে হিংসাত্মক প্রদর্শন চলছে। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত দেশের কোথাও না কোথাও লাগাতার একের পর এক হিংসক প্রদর্শন চলছে। হিংসা থামানোর জন্য আর অশান্তি নিষ্ক্রিয় করার জন্য রাজ্য পুলিশ রায়ট কন্ট্রোল শব্দের ব্যাবহার করে। আর এই হিংসক প্রদর্শন থামানোর জন্য পুলিশের গুলিতে বিগত ১০ বছরে মোট ৭২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামে সালেম গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ১০,০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে চাইছিল তৎকালীন সিপিএম সরকার। সেই সময় জমি দিতে অনিচ্ছুক চাষিরা এক হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রদর্শন করে। স্থানীয়দের ঠেকাতে পুলিশ গুলি চালায়, আর পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ১৪ জনের।
২০১০ সালে মহারাষ্ট্রের রত্নাগিরি জেলার জৈনাপুরায় পরমাণু প্রোজেক্ট নিয়ে গ্রামবাসীরা হিংসক প্রদর্শন করে। ওই ঘটনা থামাতে পুলিশ গুলি চালায়, আর অফিসিয়ালি ভাবে ওই ঘটনায় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল একজনের।
২০১১ সালে বিহারের ফারবিসগঞ্জে একটি ফ্যাক্টরিকে জমি দেওয়ার বিবাদে গ্রামবাসীরা বিরোধ প্রদর্শন করে। বিরোধ প্রদর্শন হিংসক হওয়ার পর পুলিশ কড়া পদক্ষেপ নেয়, আর পুলিশের গুলিতে চার জনের মৃত্যু হয়।
২০১৩ সালে মহারাষ্ট্রের ধুলেতে পুলিশ সম্প্রদায় বিশেষ কয়েকজন যুবকের উপর গুলি চালায়। ওই ঘটনায় ছয় যুবক মারা গেছিল। শোনা গেছিল যে, পুলিশ সেই সময় দোকানে লুঠপাট চলাচ্ছিল।
২০১৫ সালে অন্ধ্র প্রদেশের চিত্তুর জেলায় Seshachalam এর জঙ্গলে অবৈধ ভাবে চন্দন কাটার জন্য গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে সেই সময় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০১৫ সালে মধ্যপ্রদেশের মান্দাসৌর জেলায় চাষিরা ফসলের বেশি দামের দাবিতে প্রদর্শন করে। এছাড়াও ঋণ মুকুবের দাবি করে। বিক্ষোভ প্রদর্শন হিংসার রুপ নিয়ে নেয়। এবং হিংসা থামাতে পুলিশ গুলি চালায়। এরফলে পুলিশের গুলিতে ৫ জনের মৃত্যু হয়।
২০১৮ সালে তামিলনাড়ুর থুন্থুকুড়িতে কপার ফ্যাক্টরি দ্বারা ছড়ানো দূষণের বিরুদ্ধে প্রদর্শন দেখায় এলাকাবসী। এই প্রদর্শন হিংসাত্মক হওয়ার পর পুলিশ অশান্তি থামাতে গুলি চালায়। সেই গুলিতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন মোট ৫৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল পুলিশের গুলিতে ২০০৯ – ৪, ২০১০ – ২৩৯, ২০১১ – ১০৯, ২০১২ – ৭৮, ২০১৩ – ১০৩। মোট ৫৩৩
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার আসার পর পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে মোট ১৮৭ জনের। ২০১৪ সালে ৪১, ২০১৫ সালে ৪২, ২০১৬ সালে ৫৭, ২০১৭ সালে ৩৪, ২০১৮ সালে ১৩। মোট ১৮৭ জন।