বাংলা হান্ট ডেস্ক: বলা হয় যে, সঠিক পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। আর কিছু কিছু মানুষ সেই পরিশ্রমের জেরেই পৌঁছে যান সফলতার শীর্ষে। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি তাঁরা অনুপ্রাণিত করেন বাকিদেরওকেও। মূলত, এই পরিশ্রমের কোনো বয়স এবং বিকল্প থাকেনা। পাশাপাশি, আপনাকে এটাও মনে রাখতে হবে যে সফলতা চলে এলেও পরিশ্রম কিন্তু থামিয়ে দেওয়া চলবেনা!
এর প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ হলেন ১০১ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা। যে বয়সে অনেকেই মনোবল হারিয়ে বার্ধক্যের সাথে লড়াই করেন সেখানে ইনি নিজের উদ্যম এবং মনোবলকে সঙ্গী করে পূর্ণগতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। আমরা কেরালার ত্রিশুরের বাসিন্দা পদ্মাবতী নায়ারের কথা বলছি। ১০১ বছর বয়সেও তিনি প্রতিদিন তিন ঘন্টা করে কাজ করেন।
শুধু তাই নয়, পদ্মাবতী শাড়ির ডিজাইন ও অলংকরণের কাজও করেন। তাঁর দক্ষ এবং সুনিপুণ হাতেই তৈরি হয়ে ওঠে একের পর এক শাড়ি। আর এটা সম্ভব হয়েছে কারণ তিনি তাঁর এই কাজকে খুব ভালোবাসেন এবং মনোযোগ দিয়ে করেন। এই বয়সেও কাজ করার প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমি এটা উপভোগ করি, এবং এটি আমাকে অনেক তৃপ্তি দেয়।”
নিজের হাতে ডিজাইনের নকশা প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে, সেগুলিকে রং করা, সবকিছুই সামলান তিনি। তাঁর মেয়ে এবং পুত্রবধূ পদ্মাবতীর জন্য শাড়ি নিয়ে আসেন। সেগুলির উপরেই তিনি কাজ করেন। ১৯২০ সালে ভাদাক্কানচেরিতে জন্মগ্রহণ করা পদ্মাবতীর জীবনের মূলমন্ত্র হল, “নিজের কাজে ব্যস্ত থাকুন এবং অন্যের জীবনে কোনো হস্তক্ষেপ করবেন না।”
এই প্রসঙ্গে তাঁর মেয়ে লতা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, “একটি শাড়ির কাজ শেষ করতে মায়ের প্রায় এক মাস সময় লাগে এবং এখন তাঁর হাতে ইতিমধ্যেই পাঁচটি শাড়ি রয়েছে যা তাঁকে শেষ করতে হবে।” পদ্মাবতী তাঁর কাজের উপার্জন নিজের জন্য ব্যয় করেন না। বরং সেই অর্থ তিনি তাঁর নাতির জন্য ব্যয় করেন।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তাঁর তৈরি এক-একটি শাড়ির দাম হল প্রায় ১১,০০০ টাকা। পাশাপাশি দোপাট্টার দাম প্রায় ৩,০০০ টাকা। এদিকে, বয়স্কা হলেও তিনি কিন্তু একেবারে আধুনিক। সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপও ব্যবহার করেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই কর্মদ্যোগী মানসিকতা সকলের কাছেই এক অনুপ্রেরণার বিষয় হয়ে উঠেছে।