বাংলাহান্ট ডেস্ক : ছোট্ট ছেলে তার পিসির নাম দিয়েছিল ভেটকি। কিন্তু, শুধুমাত্র ভেটকি বলে ডাকার অপরাধে নিষ্পাপ বালকের প্রাণটিও যে চলে যাবে তাই বোধহয় স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি কেউই। অবশেষে প্রায় ১৫ দিন পর অন্ডাল শিশু হত্যাকাণ্ডের কিনারা করল পুলিশ। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের ভিত্তিতে সন্দেহ করা হয় মৃত শিশু সৌরভ বাউরির খুড়তুতো পিসির ওপর। সন্দেহের ভিত্তিতেই চলে তদন্ত এবং তাতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সাত বছরের শিশু সৌরভ বাউরির মৃত্যু হয়েছে তার খুড়তুতো পিসির হাতেই।
অন্ডাল পুলিশ সূত্রে খবর, খেলার ছলে ছোট্ট সৌরভ তার পিসিকে ‘ভেটকি’ বলে সম্বোধন করায় উত্তেজিত হয়ে তার পিসি খুন করে ভাইপোকে। প্রায় ১৫ দিন পরে এই খুনের রহস্য সমাধান হতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে। অন্ডালের মাধবপুর কোলিয়ারিতে ঘটে যাওয়া এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় হতবাক হয়েছেন নেটিজেনরা। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সৌরভের পিসি সহ আরো তিনজনকে গ্রেফতার করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্তদের নাম যশোদা বাউরী, গণেশ বাউরী ,রোহন বাউরী ও উমেশ বাউরী, এরা সকলেই অন্ডালের মাধবপুর অঞ্চলের বাসিন্দা। ধৃত অভিযুক্তদের পুলিশ বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তুললে বিচারক তাদের জামিন খারিজ করে দেন এবং তাদের সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
অন্ডালের মাধবপুর এলাকার সৌরভ বাউরী (৭ বছর) গত ৬ জুলাই হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় এবং ৭ তারিখ তার দেহ খুঁজে পাওয়া যায় নিকটবর্তী জঙ্গলে। সৌরভের পরিবার ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ তোলেন যে তাকে খুন করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বাউরী সমাজ ও স্থানীয় এলাকাবাসী খুনে অভিযুক্তদের পাকড়াও গড়ার জন্য এবং শাস্তির জন্য ঘেরাও করে স্থানীয় অন্ডাল থানা চত্বর।
বুধবার রাতে পুলিশ একই পরিবারের যশোদা বাউরি সহ আরো তিনজনকে গ্রেফতার করেন। শুরু হয় জেরা করা। পুলিশী জেলায় বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনার দিন সৌরভ ও তার সমবয়স্ক কয়েকজন ছেলে মেয়ে একসাথে মিলে খেলছিল। তখনই তার কুরতুতো পিসিকে দেখে সৌরভ তাকে ভেটকি বলে সম্বোধন করায় রেগে গিয়ে সৌরভের দিকে ইট ছুড়ে মারেন তার পিসি। ইটের আঘাতে আহত হয়ে লুটিয়ে পড়ে সৌরভের দেহ।
সৌরভের দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়তেই তার পিসি ভয় পেয়ে যান এবং তাকে নিয়ে আসেন তার বাড়িতে পরে বুঝতে পারেন যে সৌরভের মৃত্যু হয়েছে। সেই দিন রাতেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে সৌরভের দেহ জঙ্গলে ফেলে আসে তার পিসি এবং এতে সাহায্য করে পিসির পরিবার অর্থাৎ অভিযুক্ত আরও তিনজন। পরের দিন অর্থাৎ সাত তারিখ সৌরভের ক্ষতবিক্ষত দেহ খুঁজে পাওয়া যায় জঙ্গলে।