বাংলাহান্ট ডেস্ক: নেশা এমনি বিষম বস্তু যা উচ্চ শিখরে থাকা ব্যক্তিকে একটানে নীচে নামিয়ে আনতে পারে। আবার উলটোটারও অনেক উদাহরণ রয়েছে। মাদকের (Drugs) নেশায় ডুবে থাকা ব্যক্তি খড়কুটো আঁকড়ে নিজের চেষ্টায় জীবনের মূল স্রোতে ফিরেছেন। না, উদাহরণ খুঁজতে বলিউডে যাওয়ার দরকার নেই। দৃষ্টান্ত রয়েছে চোখের সামনেই, ‘গাঁটছড়া’র রাহুল ওরফে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় (Anindya Chatterjee)।
ছোটপর্দা এবং বড়পর্দার অত্যন্ত চেনা মুখ। যেমন ভাল অভিনয় করেন তিনি, বাস্তবেও ঠিক ততটাই সুন্দর মনের একজন মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মজাদার কাণ্ডকারখানা খুব উপভোগ করেন সকলে। চূড়ান্ত ফিটনেস ফ্রিক অনিন্দ্যর পেশিবহুল শরীরও ঈর্ষা করার মতোই। অথচ এই মানুষটাই প্রায় দু দশক আগে কেমন ছিলেন তা জানলে শিউড়ে উঠবেন অনেকেই। কার্যত পাঁক থেকে নিজেকে টেনে তুলেছেন অনিন্দ্য।
সবারই একটা অতীত থাকে। অনিন্দ্যরও আছে। তিনি একসময় মাদক সেবন করতেন। রীতিমতো বুঁদ হয়ে থাকতেন নেশায়। না, এই অতীত তিনি গোপন করেননি। বরং ওই ভয়াবহ অবস্থা থেকে আজকের সময়ে তিনি কীভাবে পৌঁছেছেন সেই সফরের গল্পটা বলে বরং আর পাঁচজনকে অনুপ্রেরণা দিতে বেশি আগ্রহী অনিন্দ্য।
সম্প্রতি প্রায় ১৮ বছর আগেকার ছবি শেয়ার করে কিছু স্মৃতি শেয়ার করেছেন অনিন্দ্য। পুরনো অনিন্দ্যকে চেনা দায়। তিনি লিখেছেন, ‘এই ছবিটা খুঁজে পেলাম। হয়তো ২০০৪-২০০৫ এর হবে। তখন আমি মাদক সেবন করতাম। শরীরে আর কোনো শিরাই বাকি ছিল না। নিজের চোখের সামনে বন্ধুদের মরতে দেখেছি। এখন যখন গত ১৫ বছর ধরে আমি নেশামুক্ত, আমি মাঝেমাঝে ভাবি ওই নরক থেকে বেঁচে ফিরলাম কীকরে? মিরাক্যল অবশ্যই ঘটে, আমি বিশ্বাস করি।’
কার্যত পুনর্জন্ম হয়েছে অনিন্দ্যর। এর আগে নিজের জন্মদিনে ২০০৮ সালের স্মৃতি তুলে ধরেছিলেন তিনি। হাবড়ায় রিহ্যাবে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। ৬-৭ বছর ধরে একটা বৃত্তের মধ্যে আটকে ছিলেন।অনিন্দ্য। রিহ্যাবে থাকলে ভাল থাকতেন। বাইরে বেরোলেই আবার নেশা করতেন। তিনি নিজে কখনো ভাবতে পারেননি যে নেশামুক্ত হবেন, অন্য কেউও তাঁর উপরে বিশ্বাস রাখেনি। নেশার জন্য চুরি পর্যন্ত করেছেন!
অনিন্দ্য লিখেছিলেন, চারজন তাঁরই মতো নেশাগ্রস্তকে চোখের সামনে মরে যেতে দেখে ভয় পেয়েছিলেন অনিন্দ্য। রিহ্যাবে থেকে নিজের চেষ্টায় আজ তিনি সম্পূর্ণ নেশামুক্ত। অভিনেতার কথায়, আজ রাস্তায় যখন সবাইকে সেলফি তুলতে চায়, অটোগ্রাফ চায় আর নিজেকে দেখেন, সবটাই স্বপ্নের মতো লাগে তাঁর।