বাংলা হান্ট ডেস্ক : আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের হত্যার পর পেরিয়েছে চব্বিশ ঘন্টারও বেশি সময়। ঘটনার জেরে তোলপাড় রাজ্য। আনিসের জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে গতকাল থেকেই পথে নেমেছেন বাম ছাত্র যুবরা। আজ যেন আরও কিছুটা বাড়ল সেই বিক্ষোভের আঁচ।
এদিন হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপারকে তলব করা হয় ভবানীভবনে। সকালেই তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ কর্তারা। কিন্তু পুলিশকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। সেই কারণেই আনিসের বাড়িতে ঢুকতে পারার আগেই ফিরে যেতে বাধ্য হয় পুলিশ। খুনের পর একদিন কেটে গেলেও কেন এগোয়নি তদন্তের কাজ, কেন এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করল না পুলিশ এই অভিযোগে সরব হয়েছেন এলাকাবাসীরা। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ আধিকারিক জানান, অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় গতকাল পৌঁছাতে পারেনি পুলিশ। এরপরই ঘৃতাহুতি হয় বিক্ষোভে আগুনে।
স্থানীয়দের অভিযোগ শুক্রবার গভীর রাতেই খবর দেওয়া হয়েছিল পুলিশকে। কিন্তু রাতে কেউই আসেনি। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা হয়নি কোনও নমুনাও। শনিবার সকাল ৮ টা নাগাদ আনিস খানের বাড়িতে আসে পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তখন। এরকম একটি স্পর্শকাতর মামলার ক্ষেত্রেও দেড় দিন কাটলেও তারপর থেকে আর দেখা মেলেনি পুলিশের। এমনকি ঘিরেও দেওয়া হয়নি ঘটনাস্থল।
রবিবার পরিবারের হাতে এসে পৌঁছেছে আনিসের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। সেখানে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মাথায় আঘাত লেগেই মৃত্যু হয়েছে তার। অ্যালকোহলের উপস্থিতি থাকলেও তার পেটে অ্যালকোহল ছিল কি না সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ছেলের মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন আনিসের বাবা। তাঁর দাবি, ‘যে পুলিশ ছেলেকে খুন করেছে তারা কখনওই সুবিচার দেবে না।’ একই সঙ্গে পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্টকেও প্রভাবিত করতে পারে বলেই আশঙ্কা তাঁর। ইতিমধ্যেই পুরো ঘটনায় জড়িয়েছে রাজনীতি।
অভিযোগের তীরে বিদ্ধ বিজেপি। রাজ্যজুড়ে দফায় দফায় বিক্ষোভে সামিল হয়েছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। আমতায় পৌঁছেছেন সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। আনিসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যও। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। দিলীপ ঘোষের দাবি সমস্ত কিছুই বিরোধীদের চক্রান্ত। অন্যদিকে দোষ পুলিশের ঘাড়ে চাপিয়ে নিরপেক্ষ বিচারের দাবি তুলেছেন সুকান্ত মজুমদার।