বাংলাহান্ট ডেস্ক: বলিউড (Bollywood) মানেই যে শুধু কোটিপতিদের মেলা, তেমনটা কিন্তু নয়। এমন অনেক নামী অভিনেতাই আছেন যারা রীতিমতো খেটে এই জায়গায় এসে পৌঁছেছেন। এই তালিকায় নাম রয়েছে অভিনেতা অন্নু কাপুরেরও (Annu Kapoor)। ইন্ডাস্ট্রির যথেষ্ট পরিচিত মুখ তিনি তবে শুধু অভিনয়ই নয়, সঞ্চালক এবং কৌতুকশিল্পী হিসাবেও দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি।
১৯৫৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশের ভোপালে জন্মগ্রহণ করেন অন্নু কাপুর। ছোট থেকেই পরিবারে সংষ্কৃতির ঘেরাটোপে বড় হয়ে উঠেছেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন নাট্য জগতের একজন অভিনেতা। মা ও ছিলেন সঙ্গীত সংষ্কৃতির পূজারী। তিনি ছিলেন পেশায় একজন ক্লাসিকাল নৃত্যশিল্পী। মা বাবাকে দেখেই সাংষ্কৃতিক জগতের প্রতি আগ্রহ জন্মায় অন্নুর।
যদিও প্রথমে অভিনয়ে আসার কোনো পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। পড়াশোনায় ভাল ছিলেন অন্ন। আইএএস অফিসারের মতো সম্মানীয় চাকরি করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিধাতার ইচ্ছা ছিল অন্য রকম। পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি ভেঙে পড়ায় সে স্বপ্ন ভুলতে হয় অন্নুকে। তিনি পা রাখেন অভিনয় জগতে।
প্রথমে নিজের বাবার থিয়েটার কোম্পানিতেই কাজ শুরু করেন তিনি। তারপর অবশ্য ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা তে অভিনয় শেখা শুরু করেন তিনি। জীবনে অনেক উত্থান পতন দেখেছেন অন্নু কাপুর। মুম্বইয়ে নিজের পায়ের তলার মাটিটা নিজেকেই শক্ত করতে হয়েছে। কিন্তু ভোপাল থেকে মুম্বইয়ের সফরটাও কিন্তু সহজ ছিল না।
এক সাক্ষাৎকারে অন্নু কাপুর বলেছিলেন, তিনি যখন মুম্বই আসার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, তখন তাঁর পকেটে ছিল মাত্র ৪১৯ টাকা ২৫ পয়সা। খরচ চালানোর জন্য চা ও তেলেভাজার দোকানও দিয়েছিলেন তিনি। তবে পরিশ্রম সার্থক হয়েছিল অন্নু কাপুরের।
১৯৮৩ সালে পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ‘মন্ডি’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পা রাখেন অন্নু। তাঁর চরিত্রটি ছিল একজন চিকিৎসকের। উল্লেখ্য, ডেবিউয়ের দু বছর আগে একটি নাটকে এক বৃদ্ধের ভূমিকায় অন্নু কাপুরের দুরন্ত অভিনয় দেখেই নিজের ছবিতে তাঁকে কাস্ট করেন শ্যাম। তবে অভিষেক করেও তেমন বড় কোনো চরিত্র পাচ্ছিলেন না অন্নু কাপুর।
এরপর ১৯৯৩ সালে দূরদর্শনে ‘অন্তাক্ষরী’ শো তাঁর কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শোতে সঞ্চালক এর ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অন্নুকে। এরপর থেকেই একের পর এক ছবিতে প্রস্তাব পেতে থাকেন তিনি। কেরিয়ারে ১০০ টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন অন্নু কাপুর। জানিয়ে রাখি, অন্নুর আসল নাম কিন্তু অনিল কাপুর। নাম নিয়ে ধন্দ কাটাতেই শাবানা আজমি ও অন্যান্যরা তাঁকে নাম বদলানোর পরামর্শ দেন।