বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাঙ্ক (World Back) জানিয়েছে যে, আগামী অর্থবর্ষে ভারতের (India) অর্থনৈতিক বৃদ্ধি দুর্দান্ত হবে। অপরদিকে, ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের (Pakistan) অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্বব্যাঙ্কের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে পাকিস্তানে দারিদ্রের বিষয়টি বিদ্রোহ সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, সেখানকার এক কোটিরও বেশি জনসংখ্যা দারিদ্রসীমার নিচে চলে যেতে পারে।
বিশ্বব্যাঙ্ক বলেছে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। দেশের নগদ সঙ্কট নিয়ে সতর্ক করেছে তারা। এছাড়াও, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করা দেশটিতে এক কোটির বেশি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্কের হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তান অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার অত্যন্ত মন্থর। যেটি হল ১.৮ শতাংশ। কিন্তু, সেখানে মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা এর চেয়ে অনেক বেশি। চলতি বর্ষে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার ২৬ শতাংশে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাঙ্ক পাকিস্তানের বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাদের ৬ মাসের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে অনুমান করা হয়েছে যে, পাকিস্তান সমস্ত ম্যাক্রো ইকোনমিক প্যারামিটারগুলি অর্জন করতে পারেনি।
বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে, পাকিস্তান তার প্রাথমিক বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে নাও পারে। টানা তিন বছর লোকসানে থাকতে পারে ওই দেশ। এটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) শর্তের পরিপন্থী। উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানকে তহবিল দেওয়ার বিনিময়ে, IMF তার রাজস্ব বৃদ্ধি এবং উদ্বৃত্ত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের একটি বাধ্যতামূলক শর্ত নির্ধারণ করেছে।
দারিদ্র দূরীকরণে পাকিস্তানের প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বিশ্বব্যাঙ্কের এই রিপোর্টটি মূলত লিখেছেন সৈয়দ মুর্তজা মোজাফফরি। তাঁর মতে, পাকিস্তানের পুনরুজ্জীবন ঘটছে, তবে তা একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দারিদ্র দূরীকরণে যে প্রচেষ্টা চলছে তা যথেষ্ট নয়। বলা হয়েছে যে, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সামান্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সময়ে, প্রায় ৯.৮ কোটি পাকিস্তানি ইতিমধ্যেই দারিদ্রসীমার নিচে রয়েছেন। এতে দারিদ্রের হার প্রায় ৪০ শতাংশে রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ভারতে এই প্রথম! চালক ছাড়াই নিশ্চিন্তে চলবে Self-Driving Electric Scooter, নয়া নজির গড়ল Ola
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দারিদ্রসীমার ঠিক ওপরে বসবাসকারী মানুষরা এই সীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। যার ফলে এক কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যেতে পারেন। বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কৃষি উৎপাদনে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু নির্মাণ, বাণিজ্য ও পরিবহণের মতো উচ্চ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতি এবং সীমিত মজুরি বৃদ্ধির দ্বারা এই সুবিধাটি নিরপেক্ষ করা হবে।
আরও পড়ুন: ব্যর্থ হল Disney+Hotstar-এর প্ল্যান! JioCinema-য় ফ্রি-তে ম্যাচ দেখিয়েই বিপুল লক্ষ্মীলাভ আম্বানির
এদিকে, রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে দৈনিক মজুরিপ্রাপ্ত শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে মাত্র ৫ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে ৩০ শতাংশের ওপরে। বিশ্বব্যাঙ্ক সতর্ক করে জানিয়েছে যে, পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বিদ্যালয় না যাওয়া শিশুদের সংখ্যা বাড়তে পারে। এছাড়াও, এর ফলে দুস্থ পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতার ক্ষেত্রে চিকিৎসা পেতেও অসুবিধে হতে পারে।