বাংলা হান্ট ডেস্ক: শেখ হাসিনা বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়ার পরও বাংলাদেশে হিংসাত্মক ঘটনা থামছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর ঢাকার পরিবেশ খুবই খারাপ ছিল। সোমবার রাতে একাধিক জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। নেতা থেকে শুরু করে আধিকারিকদের টার্গেট করা হয়। পাশাপাশি, একাধিক প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালানো হয়। হামলার হাত থেকে বাদ পড়েনি হিন্দু মন্দিরগুলিও।
বাংলাদেশে (Bangladesh) প্রাণ গেল আরও ১০০ জনের:
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার বাড়িতে হামলা: জানিয়ে রাখি যে, বাংলাদেশে (Bangladesh) শুধু প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেই বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করেনি। বরং, রাজধানী ঢাকা ও তার বাইরে হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, দলীয় এমপি ও নেতাদের বাসভবন ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালানো হয়েছে। বহু সরকারি অফিসে অগ্নি সংযোগের ঘটনা সামনে এসেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকাতে হিংসাত্মক ঘটনা এবং হিন্দু মন্দিরে হামলা ও ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা সহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন।
একদিন আগেও শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগেও গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে (Bangladesh) ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এরপর জনতা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে মিছিল করে। একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৫০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালগুলি থেকে যেসব ছবি সামনে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ মানুষই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকার বাইরেও ঘটছে হিংসাত্মক ঘটনা: ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকার খবর অনুযায়ী, গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উপকণ্ঠে সাওয়ার ও ধামরাই এলাকায় পুলিশ ও দুর্বৃত্তদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের (Bangladesh) আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বলেছেন এবং জনগণের সম্পদ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হোক “ভারত বিরোধী” ইউনূস! নাম সামনে আসতেই শুরু হল হইচই
মঙ্গলবার খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এদিকে, এই উত্তপ্ত পরিবেশের মধ্যেই বাংলাদেশে (Bangladesh) দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার থেকেই খুলে গিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে, পড়ুয়ার সংখ্যা যথেষ্ট কম রয়েছে। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিরাট কৃতিত্ব, মুকেশ আম্বানির Reliance গড়ল বড় নজির! ধন্য ধন্য করছে গোটা দেশ
টার্গেট করা হচ্ছে হিন্দুদের: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বাংলাদেশে হিংসাত্মক ঘটনা ও অগ্নিসংযোগের মধ্যে, দুর্বৃত্তরা এখন সংখ্যালঘু হিন্দুদের টার্গেট করতে শুরু করেছে। হিন্দুদের বাড়িঘর ও দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশে (Bangladesh) নির্মিত হিন্দু মন্দিরও এখন এই হামলার শিকার হয়েছে। বাংলাদেশের মেহেরপুর ইসকন মন্দিরেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ এর আগে একাধিকবার হামলার সম্মুখীন হয়েছে হিন্দু মন্দিরগুলি। এর আগে ২০২১, ২০২২ এবং এখন ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ইসকন মন্দিরে ৩ টি হামলা হয়েছে। বাংলাদেশে বহু বছর ধরেই হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন চলছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যায় হিন্দুদের অংশ ১৯৫১ সালে থাকা ২২ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৮ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এই সময়ে মুসলমানদের জনসংখ্যা ১৯৫১ সালে ৭৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ৯১ শতাংশের বেশি হয়েছে।