বাংলাহান্ট ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) জাল যে ঠিক কত গভীর অবধি চলে গিয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। তার থেকে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আপাতত এই মামলায় গোয়েন্দাদের জালে রয়েছেন কুন্তল ঘোষ। তাঁকে ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দীয় গোয়েন্দা সংস্থা। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, ঠিক কীভাবে করা হত নিয়োগ দুর্নীতির এই কাজ। সম্প্রতি তাতে যা জানা গেল, তার সমাধান পেতে গুগলের অবধি দারস্থ হতে হল সিবিআই-কে।
জানা গিয়েছে, ফের খোঁজ মিলেছে কুন্তলের ভুয়ো ওয়েবসাইটের। সিবিআই সূত্রে খবর, অযোগ্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেখানোর জন্য একটি নয়, দু’টি ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলেন কুন্তল। গুগলে WBBPE লিখে সার্চ করলে আসল সাইটের নীচেই দেখাতো ভুয়ো ওয়েবসাইটগুলি। সিবিআই সূত্রে খবর, এই ওয়েবসাইটগুলি কাজে লাগিয়েই নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হত। এখানেই শেষ নয়। এর আগেও ইডি-র তরফে জানা গিয়েছিল, ভুয়ো ওয়েবসাইট কাজে লাগিয়েই চাকরিপ্রার্থীদের কুন্তল বোঝাতেন যে তাঁরা চাকরিতে পাশ করেছেন।
এরপর তাঁদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হত ‘রেট চার্ট’। অর্থাৎ কত টাকা দিলে তবে প্রার্থী নিজের জায়গা পাকা করতে পারবেন। তদন্তে নেমে কুন্তলের এই কাণ্ডের কথা জানতে পারেন গোয়েন্দারা। ওই ওয়েবসাইটগুলি আসলে কে বা কারা তৈরি করেছিলেন? ঠিক কীভাবে কাজ হত? কার নামে রয়েছে ওই ওয়েবসাইটের ডোমেন? এই সংক্রান্ত তথ্য পেতে গুগলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গুগলের কাছে ইমেল পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে এই সংক্রান্ত তথ্য।
নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় ঠিক কতটা গভীর অবধি বিস্তৃত, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আর কার কার নাম উঠে আসতে পারে, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ। তারপর থেকেই এ বিষয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এরপর নিয়োগ দুর্নীতির মামলা ঠিক কোথায় কোথায় রয়েছে তা জানার চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা।
গোয়েন্দাদের দাবি, নিয়োগকাণ্ডে ‘মিডলম্যানের’ কাজ করতেন কুন্তল ঘোষ। সূত্রের খবর, ওই ওয়েবসাইটগুলি তৈরির লক্ষ্যে ছিলেন টাকা দেওয়া চাকরিপ্রার্থীরা। এগুলি দেখতে ছিল হুবহু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটের মতো। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এগুলি দেখে কারও মনে সন্দেহই হওয়ার কথা ছিল না। টাকা দেওয়া প্রার্থীরা জানতে চাইতেন পর্ষদের ওয়েবসাইটে তাঁদের নাম উঠল কি না অথবা নম্বর বাড়ল কি না। তখন এই ওয়েবসাইটে তাঁদের নাম দেখিয়ে দেওয়া হত। নিয়োগ দুর্নীতির জল আরও কতদূর গড়ায়, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা বাংলার মানুষ।