পাকিস্তানে ভেঙে ফেলা হল আরও একটি হিন্দু মন্দির!

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পাকিস্তানের (Pakistan) সিন্ধ প্রান্তে ১০ অক্টোবর হিন্দুদের একটি মন্দির ভেঙে ফেলা হয়। মিডিয়া রিপোর্টস অনুযায়ী, শনিবার সিন্ধের বাডিন প্রান্তের করিয়ো ঘনবার এলাকায় হিন্দুদের একটি মন্দিরে ভাঙচুর চালানো হয়। এই মামলা পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের একটি জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত। লন্ডনে থাকা পাকিস্তানি মানবাধিকার কর্মী অনিল গুলজার বলেন, পাকিস্তানে ৪২৮ টির মধ্যে আর মাত্র ২০ টি মন্দির অবশিষ্ট আছে।  হিন্দুরা পাকিস্তানের সবথেকে বড় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। কিন্তু পাকিস্তানে এরপরেও হিন্দু মন্দিরে বর্বরতা আর কমছে না। হিন্দু সম্প্রদায় এই হামলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রান্তে শুধু হিন্দুদের মন্দিরে হামলা চালিয়ে সেগুলোকে ধ্বংস করেই চুপ থাকছে না পাকিস্তান। ওই প্রান্তে লাগাতার হিন্দু মেয়েদের বিশেষ করে নাবালিকাদের জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্মপরিবর্তন করিয়ে বিয়ে করার মামলা সামনে আসে। এছাড়াও হিন্দু মেয়েদের উপর অত্যাচার আর হিন্দু মেয়েদের রেপ-এর ঘটনা জলভাত হয়ে গিয়েছে। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (HRCP) পাঞ্জাব প্রান্তের বহাবলপুর শহরে হিন্দু আর খ্রিষ্টানদের নজরান্দাজ করার নিন্দা করেছে।

এর আগে আগস্ট মাসে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রান্তে দেশ ভাগের পূর্বে থাকা একটি হিন্দু মন্দিরকে ভেঙে ফেলেছিল বিল্ডার। এই ঘটনার প্রতিবাদে সংখ্যালঘু হিন্দুরা ল্যারির ফিদা হুসেইন শেখ রোডে নেমে বিক্ষোভ দেখায়। এরপর সহকারি পুলিশ কমিশনা আবদুল করীম পুলিশের সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছান আর মন্দিরের নিরীক্ষণের পর নির্মাণাধীন স্থলের তিনটি দরজা সিল করে দেন। সেখানে মন্দির ভেঙে একটি আবাসিয় ভবন বানানো হচ্ছিল। নির্মাণাধীন এলাকা সিল করার পর উনি বলেন, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আর তদন্তের কারণে নির্মাণাধীন স্থলকে সিল করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহম্মদ ইরশাদ বালুচ বলেন, ‘অন্যায় ভাবে বহু প্রাচীন মন্দিরকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমরা এই মন্দিরটি ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি।” এলাকার আরেক বাসিন্দা হীরা লাল বলেন, মন্দিরের আশেপাশে প্রায় ১৮ টি পরিবার বাস করে। উনি বলেন, আমদের বিল্ডার দ্বারা আশ্বাস দেওয়া হয় যে, মন্দিরকে ভাঙা হবে না। কিন্তু বিল্ডার প্রতিশ্রুতি পালন না করে মন্দির ভেঙে ফেলে।

পাকিস্তানি মিডিয়া অনুযায়ী, আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘লকডাউনে কারোর মন্দিরে ঢোকার অনুমতি ছিল না।” আরেক জন বলেন, বিল্ডার মহামারীর সুযোগে মন্দিরটি ভেঙে ফেলেছে। তিনি পুনরায় মন্দিরটিকে নির্মাণের দাবি জানিয়েছে। উনি জানান, বিল্ডাররা আমাদের আশ্বস্ত করেছিল যে মন্দির ভাঙা হবে না। বিল্ডার এও বলেছিল যে, আমরা বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজছি।

মন্দির ভেঙে ফেলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার হিন্দুর সেখানে পৌঁছান। আধিকারিকদের সাথে কথা বলার সময় তাঁদের হতাশা এবং ক্ষোভ স্পষ্ট বোঝা যায়। এক হিন্দু কার্যকরতা মোহন লাল বিল্ডারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের হুমকি দেওয়া এবং ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছেন। উনি বলেন, ‘আমরা মন্দিরের প্রবেশ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু বিল্ডার আমাদের কোনমতেই মন্দিরে প্রবেশ করতে দেয় নি।”


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর