বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এমনিতেই বারবার দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি এবং বাকি বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। কখনো ত্রাণ বণ্টন নিয়ে দুর্নীতি, আবার কখনো চিটফান্ড দুর্নীতি বা কয়লা দুর্নীতি। বারবারই বিরোধীদের তিরে বিদ্ধ হয়েছে এরাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এবার আরও একটি দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসায় ফের চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের বিরোধী দলগুলো তৃণমূলকে ‘চাল চোর” বলে কটাক্ষ করে এসেছে। আর এবার সেই চাল নিয়ে এক বড়সড় কেলেঙ্কারি ধরা পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ চাল সঠিক পরিমাণে পাচ্ছে না স্কুলের কচিকাচারা। পড়ুয়াদের যেই পরিমাণে চাল দেওয়ার কথা, তার থেকে অনেক কম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রাজ্যেরই এক শিক্ষক সংগঠনের।
করোনার কারণে দেশজুড়ে জারি হয়েছিল লকডাউন। বাদ যায়নি বাংলা। আর এই লকডাউনের কারণে প্রায় বছর দেড়েক স্কুল বন্ধ ছিল। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে মিড ডে মিলও বন্ধ ছিল। কিন্তু পড়ুয়াদের মধ্যে সেই মিড ডে মিল অনুযায়ী চাল বিতরণ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, বরাদ্দ চালের থেকে অনেক কম দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের। আর এই নিয়েই এখন তুলকালাম কাণ্ড।
প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, পড়ুয়াদের মাঠে পিছু ১৫০ গ্রাম করে দৈনিক হিসেবে চাল দেয় কেন্দ্র। এই চাল রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়। ছুটির দিন বাদ দিয়ে মাসের ২২ দিনে পড়ুয়া পিছু মোট ৩ কেজি ৩০০ চাল পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু পড়ুয়ারা পেয়েছে মাত্র ২ কেজি চাল। তাহলে ১ কেজি ৩০০ চাল কোথায় গেল? শুধু তাই নয়, এও অভিযোগ উঠেছে যে, ৪০ লক্ষ পড়ুয়া ১৮ মাস ধরে চালই পায়না। অঙ্ক হিসেবে মোট ৯ কোটি ৩৬ লক্ষ কেজি চাল কম বিতরণ করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন এটাই যে, এই পাহাড় প্রমাণ চাল গেল কই?
শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, গোডাউন থেকে স্কুলের মাধ্যমে সরাসরি পড়ুয়াদের কাছে চাল পৌঁছে যাওয়ার কথা, তাহলে পড়ুয়ারা চাল পেল না কেন? ABTA শিক্ষক সংগঠনের দাবি পড়ুয়াদের মাথাপিছু ১৭০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তাহলে কেন কম চাল দেওয়া হবে? ABTA শিক্ষক সংগঠনের নেতা সুকুমার পাইন জানিয়েছেন, আমরা এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। ওনার অভিযোগ মোট ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার সামগ্রী পড়ুয়াদের হাতে পৌঁছায় নি।
এই মিড ডে মিলের চাল বা টাকা দেওয়ার পদ্ধতিতে এখন বড় বদল এনেছে কেন্দ্র। শিক্ষা দফতরের মতে এবার থেকে মিড-ডে মিলের জন্য জিরো ব্যালেন্সের একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। সেখানে কেন্দ্র দেবে ৬০ শতাংশ আর রাজ্য ৪০ শতাংশ। বছরের শেষে যদি দেখা যায় যে, কেন্দ্রের টাকা সম্পূর্ণ খরচ হয়নি। তাহলে পরের বছরের বরাদ্দ টাকা আগের বছরের টাকার সঙ্গে মিল করে পাঠানো হবে।