পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ! বাংলায় ফুড SI নিয়োগে আরেক কেলেঙ্কারি, বড় কেচ্ছা ফাঁস

   

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে রাজ্যজুড়ে (West Bengal) নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়টি রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রসঙ্গে সামনে আসছে আদালতের বিভিন্ন রায়ও। ঠিক এই আবহেই এবার একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে যে, ফর্ম ফিলাপ না করে এবং পরীক্ষা না দিয়েও PSC-র ওয়েবসাইটে ফুড ইন্সপেক্টর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিজের নাম খুঁজে পেলেন এক যুবক। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই তিনি কার্যত আকাশ থেকে পড়েছেন।

শুধু তাই নয়, তিনি ইতিমধ্যেই চাঁচল থানায় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন এবং সমস্ত নথিপত্র জমা দিয়েছেন। প্রাপ্ত। তথ্য অনুযায়ী, চাঁচল থানার মালতিপুর এলাকার যুবক গোলাম সারওয়ার আলম সিদ্দিকী এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তাঁর ফোনে বারংবার টাকার দাবি চেয়ে হুমকি আসছে বলেও জানান তিনি। এই প্রসঙ্গে গোলাম জানান, “২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পরিমল কুণ্ডু নামে এক প্রাথমিক শিক্ষক মালতিপুরে কর্মরত ছিলেন ৷ তাঁর বাড়ি হল নদিয়ার ভীমপুরে ৷ এদিকে, মালতিপুরে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। পরিমলবাবু আমাকে জানান, তিনি নাকি টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। সেই সময়ে আমিও তাঁকে নিজের চাকরির প্রয়োজনীয়তার কথা জানাই।”

Another scam in food SI recruitment in West Bengal.

গোলাম আরও বলেন, “হঠাৎ পরিমলবাবু একদিন মেসেজ করে আমাকে জানালেন যে, তাঁর কাছে ফুড ইনস্পেক্টরের চাকরির খবর রয়েছে। এমনকি, তিনি সাতদিনের মধ্যে চাকরিতে জয়েন করিয়ে দেবেন বলেও জানান। চাকরিতে যোগদানের পর আমার কাছ থেকে তিনি টাকা নেবেন। তখন বিষয়টি আমার ঠিক মনে হয়নি। আমি তখন তাঁকে এটা বলি যে আগে কোয়ালিফাই হিসেবে আমার নাম তালিকায় তুলুন, তারপরেই টাকা দেব।”

আরও পড়ুন: রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার প্রধান আচার্য পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে! শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

গোলাম জানান, তিনি এই চাকরির জন্য পরিমল কুণ্ডুর সাথে সাত লক্ষ টাকায় রফা করেন। পাশাপাশি, পরিমল কুণ্ডু জানিয়েছিলেন যে, ২০১৮ সালের ফুড এসআই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তিনি গোলামের নাম কোয়ালিফাই হিসেবে তালিকায় তুলে দেবেন। এমতাবস্থায়, গত ১৪ জুন ওই তালিকায় গোলাম সত্যিই নিজের নাম দেখতে পান। যা দেখে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন করেছিলেন যে এই ওয়েবসাইট আদৌ সঠিক কিনা। যার উত্তরে পরিমল কুণ্ডু জানিয়েছিলেন, নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে কারোর কাজ থেকে ওয়েবসাইটটি দেখিয়ে নিতে। এমনকি, কয়েকদিনের মধ্যেই জয়েনিং লেটার চলে আসবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: উন্মুক্ত ব্রিজে বিকল যাত্রীবোঝাই ট্রেন! জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সবার প্রাণ বাঁচালেন চালক, ভাইরাল ভিডিও

এমতাবস্থায়, গোলাম জানিয়েছেন, পরিমল কুণ্ডু তখন ৫০ শতাংশ টাকা পাঠাতে বলেন। এছাড়াও, বাকি টাকা চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর দিতে হবে বলে জানান তিনি। কিন্তু, গোলাম কোনও টাকা দেননি। তারপর থেকেই ক্রমাগত আসছে হুমকি ফোন। এমনকি, টাকা না দিলে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। গোলাম জানিয়েছেন, “আমি কোনওদিন এই নিয়োগ পরীক্ষার ফর্ম ফিল আপ করিনি ৷ তারপরেও এই জালিয়াতি প্রত্যক্ষ করলাম। একদিকে খুনের হুমকি পাচ্ছি অন্যদিকে এমন জালিয়াতি দেখছি। তাই,ভয় পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি। এই ঘটনার তদন্তে আমি সবরকমভাবে সাহায্য করবো।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর