বাংলা হান্ট ডেস্ক: ফের রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা ঘটল পড়শি দেশ পাকিস্তানে (Pakistan)। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু জেলার জানিখেল এলাকায় আত্মঘাতী হামলা ও গুলিবর্ষণে ১৭ জন পাকিস্তানি সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সহযোগী সংগঠন হাফিজ গুল বাহাদুর গ্রুপ (এইচজিবি) এই ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করেছে। এদিকে, এই হামলা শুধু পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতিই তুলে ধরে না বরং এটাও স্পষ্ট হয়েছে যে, সেখানকার রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বকে একসঙ্গে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
ফের ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা পাকিস্তানে (Pakistan):
নিরাপত্তা পোস্ট করা হয়েছে টার্গেট: গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি নিয়ে একটি নিরাপত্তা পোস্টে হামলা চালায়। এই বিস্ফোরণে ওই পোস্টের দেওয়াল ধসে পড়ে এবং আশপাশের কাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই হামলায় ঘটনাস্থলেই ১২ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। তবে, বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট দাবি করেছে যে ১৭ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।
হামলার পর গুলিবর্ষণ, ৬ জঙ্গি খতম: এদিকে, এই বিস্ফোরণের পরপরই সন্ত্রাসবাদী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। এনকাউন্টারে ৬ জঙ্গি নিকেশ হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী বলেছে যে তাদের সতর্কতার ফলে সন্ত্রাসবাদীরা ওই পোস্টে প্রবেশ করতে পারেনি। তবে, বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
টিটিপির সহযোগী সংগঠন দায়ী: এই হামলার দায় স্বীকার করে হাফিজ গুল বাহাদুর গ্রুপ একটি বিবৃতি দিয়েছে। তারা একটি ভিডিও শেয়ার করেছে। যেখানে পাকিস্তানি (Pakistan) সেনাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখানো হয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে টিটিপি দ্বারা সরকারের সাথে যুদ্ধবিরতি শেষ করার পর থেকে এহেন ঘটনাটি ক্রমবর্ধমান হিংসাত্মক ঘটনাকে স্পষ্ট করছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযানের ঘোষণা: এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সম্প্রতি বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক অভিযানের অনুমোদন দিয়েছেন। এদিকে, গত মঙ্গলবার এই বিষয়ে ইসলামাবাদে রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের বৈঠক চলাকালীন এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: আম্বানির চালে এবার বাড়ল মাস্কের টেনশন! আনতে চলেছেন ভারতের প্রথম হিউম্যানয়েড রোবট
পাকিস্তানে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে: বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে পাকিস্তানে (Pakistan) সন্ত্রাসবাদী হামলা বেড়েছে। টিটিপি ও অন্যান্য গোষ্ঠী ক্রমাগত তাদের তৎপরতা বাড়াচ্ছে। এই প্রসঙ্গে সিনিয়র প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ খান বলেছেন যে ২০২২ সাল থেকে, সন্ত্রাসবাদী হামলায় ৯০০-রও বেশি নিরাপত্তা কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন: এবার দেশজুড়ে সড়ক সুরক্ষা হবে আরও জোরদার, কমবে দুর্ঘটনার সংখ্যাও, বিরাট পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে: এদিকে, বিশেষজ্ঞরা এটাও জানিয়েছেন যে পাকিস্তানে (Pakistan) রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লড়াইকে দুর্বল করে দিচ্ছে। ২০২২ সালে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর রাজনৈতিক সঙ্কট আরও গভীর হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি তাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের সুযোগ পাচ্ছে।